বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত ফিনল্যান্ডের

  •    
  • ১৬ মে, ২০২২ ০৮:৫৬

রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনো ধরনের সামরিক সংঘাত হয়নি। ফিনল্যান্ডও বরাবরই নিরপেক্ষ দেশের ভূমিকা পালন করেছে। কখনোই ন্যাটোতে যোগদানে আগ্রহ দেখায়নি। সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হলে দীর্ঘদিনের নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার সঙ্গে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত থাকা ফিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগদানের আগ্রহের বিষয়টি ঘোষণা করেছে। রুশ হুমকি উপেক্ষা করেই ন্যাটোতে যোগদানের আবেদনের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করল দেশটি। যদিও ন্যাটোর সহযোগী এই রাষ্ট্রকে ন্যাটোর পূর্ণ সদস্য পদ পেতে আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিনল্যান্ড এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছে, মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় রোববার দেশটির প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসতো এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করার বিষয়ে একমত হয়েছে।

মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত এবার ফিনিশ পার্লামেন্টে যাবে। সেখান থেকে ভোটাভুটিতে এই প্রস্তাব পাস হলে দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করবে।

তবে রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশটির ন্যাটোতে যোগদান সহজ হবে না। পশ্চিমা এই সামরিক জোটের বর্তমান সদস্যসংখ্যা ৩০। ন্যাটোতে ফিনল্যান্ডের যোগ দিতে হলে প্রতিটি দেশের সমর্থন লাগবে। কোনো একটি ন্যাটোভুক্ত দেশ ফিনল্যান্ডের যোগদানের বিষয়ে ভেটো প্রদান করলেই দেশটির ন্যাটোতে যোগদান স্থগিত হয়ে যাবে।

ন্যাটোভুক্ত দেশ তুরস্ক ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টির বিরোধিতা করেছে। দেশটি এরই মধ্যে এ বিষয়ে ভেটোর ইংগিত দিয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ফিনল্যান্ড ও সুইডেন সম্পর্কে বলেছেন, দুই দেশই তুরস্কে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কাস পার্টি (পিকেকে) ও পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (ডিএইচকেপি/সি) এর নিরাপদ বাসস্থান। তুরস্ক এই দুই সংগঠনকেই সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।

ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিরোধিতা করছেন এরদোয়ান

তুরস্কের বিরোধিতা সত্ত্বেও ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। ফিনল্যান্ড ও আমাদের নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিদ্ধান্ত আমাদের নিরাপত্তার সক্ষমতা এবং নরডিক দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বৃদ্ধি করবে।’

সানা মারিন আশা করেন যে ফিনিশ পার্লামেন্টে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদনের প্রস্তাব পাস হবে।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকে দুই নরডিক দেশ ফিনল্যান্ড ও সুইডেন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে আসছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর দুই দেশই নিরপেক্ষ ভূমিকা থেকে বেরিয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যদিও ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে দুই দেশকেই সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিনল্যান্ডের এমন পদক্ষেপ রুশ-ফিনিশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি উত্তর ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ফিনল্যান্ডকে নিরপেক্ষ দেশের ভূমিকায় থাকতে বাধ্য করার জন্য রাশিয়া সামরিক প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য বিকল্প উপায়ে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

ন্যাটোর সঙ্গে ফিনল্যান্ডের যৌথ সামরিক মহড়ায় গোলাবর্ষণের দৃশ্য

তবে ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্তের কারণে ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে মস্কো ঠিক কী কী পদক্ষেপ নেবে তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি দেশটির সাম্প্রতিক দেয়া বিবৃতিতে। এর আগে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যদি ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেয়, তবে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে।

রুশ নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ এর আগে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, দুই দেশ যাতে বাস্তবতা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যথায় বাড়ির পাশে পরমাণু অস্ত্র ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে বসবাস করতে হবে তাদের।

এ ছাড়া ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ন্যাটোর সম্প্রসারণ কীভাবে কার্যকর হয় এবং তা রুশ সীমান্তের কতটা কাছে চলে আসে তার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।’

ফিনল্যান্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছে রুশ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রাও নরডিক

ফিনল্যান্ডে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান রাও নরডিক। যদিও বলা হচ্ছে, দেশটির ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়নি। পাওনা টাকা নিয়ে জটিলতার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাও নরডিক।

তবে ফিনল্যান্ড বলছে, রাশিয়া দেশটির চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। ফলে ফিনল্যান্ড বিকল্প উৎস থেকে বিদ্যুৎ আনতে পারবে। এটি দেশটির জন্য খুব একটা চাপ নয়।

এ বিভাগের আরো খবর