বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে গেলে পাল্টা ব্যবস্থার হুমকি রাশিয়ার

  •    
  • ১৩ মে, ২০২২ ০৯:২৯

রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে ফিনল্যান্ডের। দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ যুদ্ধ বা সামরিক সংঘাত হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেরও আগে। স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকেই দেশটি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। একই অবস্থা ইউরোপের আরেক দেশ সুইডেনেরও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও স্নায়ুযুদ্ধের সময়ও নিরপেক্ষ থাকা দেশটি এবার ফিনল্যান্ডের সঙ্গেই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। দুই দেশকেই এমন পদক্ষেপের পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করেছে রাশিয়া।

ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই এবার ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি জানাল রাশিয়ার আরেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র ফিনল্যান্ড। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এমন পদক্ষেপের জন্য ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে তারা ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ নিতে বাধ্য হবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিনল্যান্ডের এমন পদক্ষেপ রুশ-ফিনিশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি উত্তর ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ফিনল্যান্ডকে নিরপেক্ষ দেশের ভূমিকায় থাকতে বাধ্য করার জন্য রাশিয়া সামরিক প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য বিকল্প উপায়ে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

তবে বিবৃতিতে মস্কো ঠিক কী কী পদক্ষেপ নেবে তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এর আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যদি ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেয়, তবে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে।

নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ এর আগে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, দুই দেশ যাতে বাস্তবতা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যথায় বাড়ির পাশে পরমাণু অস্ত্র ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে বসবাস করতে হবে তাদের।

এ ছাড়া ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ন্যাটোর সম্প্রসারণ কীভাবে কার্যকর হয় এবং তা রুশ সীমান্তের কতটা কাছে চলে আসে তার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।’

সামরিক মহড়ার সময় ফিনিশ সেনারা

এর আগে ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রেক্ষাপটে ন্যাটোতে যোগ দিতে জনসমর্থন বৃদ্ধি পাওয়ায় ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসতো ও প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন এক যৌথ বিবৃতিতে দেশটিকে বিলম্ব না করে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সংসদে আলোচনার পাশাপাশি ও অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের মতামত নিয়ে ফিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি রোববার ঘোষণা করবে।

ন্যাটোর সম্প্রসারণ কীভাবে কার্যকর হয় এবং তা রুশ সীমান্তের কতটা কাছে চলে আসে তার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।

যৌথ বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ন্যাটোতে যোগদান ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা জোরদার করবে। ফিনল্যান্ডকে বিলম্ব না করে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করতে হবে।

পরে মস্কোর প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট নিনিস্তো বলেন, রাশিয়ার আক্রমণের জন্যই এই পদক্ষেপ।

তিনি ক্রেমলিনকে উদ্দেশ করে বলেন, ন্যাটোতে যোগদান কারও বিরুদ্ধে হবে না, আপনিই এটা ঘটিয়েছেন, আয়নায় নিজের মুখ দেখুন।

গত সপ্তাহের এক জনমত জরিপে দেখা যায়, ৭৬ শতাংশ ফিনিশ ন্যাটোতে যোগদানের পক্ষে ও ১২ শতাংশ বিপক্ষে মত দিয়েছেন।

পোলিং ইনস্টিটিউট অফ নোভাসের চালানো নতুন একটি জরিপে দেখা গেছে ৫১ শতাংশ সুইডিশ ন্যাটোতে যোগদানের পক্ষে। গত সপ্তাহের জরিপে যা ছিল ৪৫ শতাংশ।

নোভাস বলছে, ফিনল্যান্ড চলমান ন্যাটোতে যোগদানের বিতর্ক ও সে দেশের আইনপ্রণেতাদের আলোচনা সুইডিশদের প্রভাবিত করেছে।

রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের ৮০০ মাইলের সীমান্ত রয়েছে

রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটারের (৮০০ মাইল) সীমান্ত রয়েছে। দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক বিরোধ এড়াতে এতদিন ন্যাটো জোটের বাইরে থেকে এক অর্থে নিরপেক্ষ দেশের ভূমিকা পালন করেছে।

রোববারই ইউরোপে দীর্ঘদিন নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ভূমিকা পালন করা সুইডেনও ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানাবে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে সুইডেনকেও হুমকি দেয়া হয়েছে, যদিও দেশটির সঙ্গে রাশিয়ার কোনো সীমান্ত নেই। যেকোনো আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সুইডেনের নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ছাড়াও, এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও দেশটির নিরপেক্ষ অবস্থান ছিল।

এদিকে ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, তিনি আশা করেন সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সদস্যপদ দেয়ার প্রক্রিয়া বেশ দ্রুত হবে।

এ বিভাগের আরো খবর