করোনা মহামারির তৃতীয় বছরে লকডাউনের পথে হাঁটল উত্তর কোরিয়া। দেশটিতে কোভিড শনাক্তের পর বিধিনিষেধ কঠোর করার পদক্ষেপ নিয়েছে পিয়ংইয়ং। তবে ঠিক কতজন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, সে হিসাব মেলেনি।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএর বরাতে এ খবর ছেপেছে বিবিসি।
করোনায় প্রথম দিকে সংক্রমণের কারণে বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছিল, উত্তর কোরিয়া তখন ছিল নিশ্চুপ। করোনার কোনো তথ্য তা সরবরাহ করেনি বিশ্বকে। এমনকি করোনার টিকা নেয়ার ক্ষেত্রেও তারা ছিল উদাসীন। বিভিন্ন দেশ টিকা সরবরাহের প্রস্তাব দিলেও নাকচ করে দেয় পিয়ংইয়ং।
এসবের বদলে সীমান্ত সিলগালা করে ভাইরাসটির নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী ছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটিতে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি দীর্ঘদিনের।
অনেক বিশ্লেষক বলছেন, দেশটির আড়াই কোটি মানুষ করোনার টিকা কর্মসূচির অভাবে ঝুঁকিতে আছেন। গত বছর কয়েক মিলিয়ন অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং চীনের তৈরি সিনোভ্যাক টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেন কিম জং উন।
নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত উত্তর কোরিয়ায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়েও উদ্বেগ আছে।
কেসিএনএ বলছে, কিম জং উন প্রাদুর্ভাব নির্মূলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি করোনা সংক্রমণের বিষয়টিকে ‘গুরুতর জাতীয় জরুরি অবস্থা’ বলে অভিহিত করেছেন।
নতুন কোভিড নিয়মের রূপরেখার বৈঠকে দেশটির শাসক কিমকে প্রথমবারের মতো মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেছে। অবশ্য কিছুক্ষণ পরই তিনি মাস্ক খুলে ফেলেন।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন কিম উন। এতে দেশটিতে খাদ্যের মতো অতি প্রয়োজনীয় প্যণের সংকট দেখা দেয়; আরও দুর্বল হয়ে পড়ে দেশটির অর্থনীতি।
কেসিএনএ বলছে, ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ‘সর্বোচ্চ জরুরি অবস্থা জারি করেছেন কিম জং উন। ধারণা করা হচ্ছে, এই আদেশের আওতায় স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউন এবং কর্মক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আসতে পারে।
পিয়ংইয়ংয়ে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সতর্ক অবস্থানে আছে উত্তর কোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত
উত্তর কোরিয়ার নিউজ আউটলেট আরও বলছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রথম কেস চার দিন আগে রাজধানীতে শনাক্ত করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
সিউলভিত্তিক মনিটরিং সাইট এনকে নিউজ বলছে, সর্বশেষ ঘোষণার আগে পিয়ংইয়ংয়ের কিছু এলাকার বাসিন্দারা কমপক্ষে দুই দিন লকডাউনে ছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বলেছে, প্রাদুর্ভাবের খবরের প্রতিক্রিয়া হিসেবে উত্তরকে মানবিক সহায়তার প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনা করেছে। পিয়ংইয়ংয়ের পক্ষ থেকে এখনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।