বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত, গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ

  •    
  • ১১ মে, ২০২২ ১৮:৩৯

ভারতের আদালত জানিয়েছে, তারা এই আইন খতিয়ে দেখবে। যতদিন পর্যন্ত তারা আইনের পর্যালোচনা করবে, ততদিন নতুন করে কাউকে এই আইনে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের আদালত।

বুধবার ভারতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনার সভাপতিত্বে বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি সূর্যকান্তের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালত জানিয়েছে, তারা এই আইন খতিয়ে দেখবে। যতদিন পর্যন্ত তারা আইনের পর্যালোচনা করবে, ততদিন নতুন করে কাউকে এই আইনে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

যাদের ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা জামিনের আবেদন করতে পারবেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও এখন স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছে আদালত।

নতুন করে এই আইনে কাউকে গ্রেপ্তার করলে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবেন।

আদালত আদেশে বলে, ‘এটা স্পষ্ট যে কেন্দ্রীয় সরকার সম্মত ধারা ১২৪-এ -এর বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আইনটি সেই সময়ের জন্য তৈরি করা হয়েছিল যখন দেশটি ঔপনিবেশিক আইনের অধীনে ছিল। স্বাভাবিকভাবেই আইনটি পুনর্বিবেচনা ছাড়া এটি ব্যবহার করা উপযুক্ত হবে না। পরবর্তী পুনঃপরীক্ষা শেষ এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।’

রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে কী আছে

ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন প্রথম চালু হয় ১৮৭০ সালে। তবে ব্রিটিশ ভারতে ১৮৬২ সালে দণ্ডবিধি চালু হয়। তখন সেখানে রাষ্ট্রদ্রোহ নিয়ে সেকশন ছিল না। ১৮৭০ সালে ধারাটি যুক্ত হয়।

এই ধারা অনুসারে বালগঙ্গাধর তিলককে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মহত্মা গান্ধীকেও ইয়ং ইন্ডিয়ায় লেখার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই আইনে বিনা পরোয়ানায় কাউকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো যায়।

১৯৬২ সালে কেদারনাথ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই আইনকে সাংবিধানিক ঘোষণা করে। তবে সেসময় ভারতের আদালত জানায়, সরকারের সমালোচনা করলেও তাকে কোনোভাবেই রাষ্ট্রদ্রোহ বলা যাবে না।

স্বাধীন হওয়ার ৭৫ বছর পরেও দেশটিতে এই আইন চালু আছে।

গত বছর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে, ব্রিটিশ আমলের রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইন এখনও কেন রয়েছে।

দেশটির বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকার এই আইনটিকে ভিন্নমত দমনের কাজে অপব্যবহার করছে বলেও সেসময় জানায় আদালত।

রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে গ্রেপ্তার কতজন

দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বিহারে সর্বোচ্চ ১৬৮টি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। এর পরে তামিলনাড়ুতে ১৩৯, উত্তর প্রদেশে ১১৫ এবং ঝাড়খণ্ডে ৬২টি।

ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহের মোট ৩৫৬টি মামলা হয়েছে এবং ৫৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর এই ছয় বছরে সাতটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

প্রতিক্রিয়া

রাষ্ট্রদ্রোহ আইন খারিজ নিয়ে মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন এডিটরস গিল্ড এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। বুধবার আইন স্থগিত রাখার নির্দেশের পর মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের লড়াই আজ স্বীকৃতি পেল। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে এই রায় দেয়ার জন্য আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা রাখি, কেন্দ্রীয় সরকার যথোপযুক্ত পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এই আইনের বিলোপ ঘটাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর