গণবিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কার সংসদ সদস্যদের দেশত্যাগ ঠেকাতে বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
শ্রীলঙ্কাভিত্তিক ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদল বিক্ষুব্ধ তরুণ কাতুনায়েকে মুক্তবাণিজ্য জোন (এফটিজেড) এলাকার সড়কে অবস্থান নিয়েছেন।
এই সড়কটি দিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধান বিমানবন্দর বন্দরনায়েক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে প্রবেশ করতে হয়।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর যাতে সংসদ সদস্যরা দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে জন্য তারা বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কায় টানা কয়েক দিন ধরে চলা সরকারবিরোধী আন্দোলন সোমবার আরও বড় রূপ ধারণ করে। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনে বসা বিক্ষুব্ধদের ওপর হামলা চালায় সরকার সমর্থকরা। এতে বেশ কিছু জায়গায় সংঘর্ষ হয়। দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।
রাজধানী কলম্বোর কাছে নিত্তামবুয়া এলাকায় নিহত হন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল শ্রীলঙ্কা পদুজেনা পেরামুনার (এসএলপিপি) এমপি অমরাকীর্থি আথুকোরালা। এ ছাড়া সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
বিক্ষোভকারীরা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের কুরুনেগালা শহরে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অন্য বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীর বাড়ি ও গাড়িতেও আগুন দেয়া হয়।
প্রথমে কলম্বো এবং পরে পুরো দেশে জারি করা হয়েছে কারফিউ।
মঙ্গলবার দেশটির পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই সেনা পাহারায় কলম্বোর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ত্রিনকোমালিতে একটি নৌ ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন মাহিন্দা ও তার পরিবারের সদস্যরা। ওই নৌঘাঁটিও ঘিরে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা।
সরকারি সম্পদ বিনষ্টকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার।
মন্ত্রণালয়টি বলেছে, কাউকে সরকারি সম্পত্তি লুটপাট বা মানবজীবনের ক্ষতি করতে দেখলে নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে সেনা ও পুলিশ বাহিনীকে জরুরি ক্ষমতা দেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। এই ক্ষমতাবলে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবে নিরাপত্তা বাহিনী।
সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী কাউকে গ্রেপ্তার করলে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের আগে ২৪ ঘণ্টা নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবে।