শ্রীলঙ্কার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের কুরুনেগালা শহরে দেশটির সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়ি ‘মেদামুলানা ওয়ালাওয়াতে’ সোমবার আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
সিলন টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কাছে মাহিন্দ্রার পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় ক্ষুব্ধ সরকারবিরোধীরা রাজাপাকসে পরিবারের একসময়ের তুখোড় রাজনীতিবিদ ডিএ রাজাপাকসে স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধেও আগুন ধরিয়ে দেয়।
এর আগে মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় কমপক্ষে ১৩০ জন আহত হয়েছে। পুরো দেশে কারফিউ জারিসহ রাজধানী কলম্বোতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রী ডা. রমেশ পাথিরানা, সনথ নিশানথা, নিমাল লানজা এবং কাঞ্চনা উইজেসেকেরার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।
অন্য বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীর গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বাড়ি ও গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনার পেছনে তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের সমর্থকদের দুষছেন। তাদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করার সময় রাজাপাকসের সমর্থকরা সেখানে হামলা করে।
এরপর দেশজুড়ে রাজাপাকসের সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটাতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। গ্যালে ফেসে তারা একে অপরকে রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করলে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
রাজাপাকসের সমর্থকদের বিরুদ্ধে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের তাঁবু ভেঙে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
গত কয়েক বছর শ্রীলঙ্কার রাজনীতি বেশ টালমাটাল ছিল। এই অবস্থায় দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে। ২০২০ সালে শুরুর দুই মাসে রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমে যায়। ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে! শুধু তা-ই না, বছরের বাকি সময়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিতে হয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকারকে।
প্রায় ৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ মেটানোর জন্য রিজার্ভের ডলার বাঁচাতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। এর পর থেকেই দেশটিতে সংকট বাড়তে থাকে। এসব সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতিকে দায়ী করে আসছিলেন বিক্ষোভকারীরা।