ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভ সোমবার ব্যাপক সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সে সহিংসতায় বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা দেশটির কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীর বাড়ি ও তাদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
কলম্বো গেজেটের খবর, সাবেক মন্ত্রী ডা. রমেশ পাথিরানা, সনথ নিশানথা, নিমাল লানজা এবং কাঞ্চনা উইজেসেকেরার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।
এ ছাড়া অন্য সাবেক মন্ত্রীদের গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
বাড়ি এবং গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনার পেছনে বিক্ষোভকারীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহেন্দা রাজাপাকসের সমর্থকদের দুষছেন। তাদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করার সময় রাজাপাকসের সমর্থকরা সেখানে হামলা করে।
এরপর দেশজুড়ে রাজাপাকসের সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটাতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। গ্যালে ফেসে তারা একে অপরকে রড, লাঠি-সোঠা নিয়ে আক্রমণ করলে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের তাঁবু ভেঙে দেয় সরকার দলীয় সমর্থকরা।
সোমবার শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসে সরকারের বিরোধীদের হামলায় সরকারি দলের এক সংসদ সদস্য (এমপি) নিহত হয়েছেন। রাজধানী কলম্বোর কাছে নিত্তামবুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বিক্ষোভকারীদের আগুনে জ্বলছে মাহিন্দা রাজাপাকসের মন্ত্রিসভার পদত্যাগ করা মন্ত্রী সনাথ নিশানথার বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
এর আগে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
পদত্যাগের পর এক টুইটে মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেন, ‘আবেগী জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আপনাদের মনে রাখতে হবে সংঘাত কেবল সংঘাতই বাড়ায়। অর্থনৈতিক সংকটের প্রয়োজন অর্থনৈতিক সমাধান। তা করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বৈদেশিক রিজার্ভের সংকট এবং মুদ্রাস্ফীতিতে স্মরণকালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দায় ধুঁকছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। এ জন্য রাজাপাকসে সরকারের দুর্নীতিকে দুষছে দেশটির জনগণ। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভ রূপ নিচ্ছে সহিংসতায়। শুক্রবার সকালে কলম্বোয় সহিংসতায় আহত হন অন্তত ৭৬ জন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দুই দফায় রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপাকসে। সবশেষ শুক্রবার রাতে জারি হয় দ্বিতীয় দফায় জরুরি অবস্থা।
এদিকে কলম্বোর দক্ষিণ, উত্তর এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ এলাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে পুলিশ।
গোতাগোগামা এবং মাইনাগোগামা এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের ব্যাপক সংঘর্ষের পরপর জারি হয় কারফিউ।