ইউক্রেনের অন্যতম বড় ইস্পাত কারখানা আজভস্তলে আটকে পড়া সব বেসামরিক নাগরিককে অবশেষে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেসচুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেয়া পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আল জাজিরা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিওপোলে রুশ বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ এই ইস্পাত কারখানায় আটকে পড়ে অসংখ্য মানুষ। একপর্যায়ে তাদের উদ্ধারে অভিযানে নামে জাতিসংঘও।
উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা লিখেছেন, সব নারী, শিশু ও বয়স্কদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রাশিয়ার হামলার ভয়ে তারা এই কারখানার বাংকারে অল্প পরিমাণে খাবার, পানি ও ওষুধ নিয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন।
তিনি জানান, এই এলাকায় উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে।
আজভস্তলে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কিও।
রাতে এক ভাষণে তিনি বলেন, তিন শর বেশি বেসামরিক নাগরিককে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আটকে পড়া যোদ্ধাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি কঠিন হলেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জেলেনস্কি বলেন, 'আমরা সব বেসামরিক নাগরিককে ওই ইস্পাত কারখানা থেকে সরিয়ে নিয়েছি। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে সেখানে অবস্থান করা আহত ও চিকিৎসা সেবায় অংশ নেয়া সবাইকে সরানো হবে।'
যারা মারিওপোল রক্ষা করছেন, সেসব সেনার ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মারিওপোল শহরকে সফলভাবে মুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এ সময় ইস্পাত কারখানা আজভস্তলে দুই হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সৈন্য আটকে পড়ায় সেখানে অভিযানের পরিবর্তে অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেন তিনি।
এ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, এই ভূগর্ভস্থ কবরের মধ্যে নামার কোনো প্রয়োজন নেই। এর থেকে এই এলাকাকে এমনভাবে অবরুদ্ধ করতে হবে যাতে একটা মাছিও পালাতে না পারে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত হতাহত হয়েছে বহু মানুষ। দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আর দেশ ছেড়েছে ৫০ লাখের বেশি।