২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ৬৪২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর আট মাস পর ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
২৯ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার কমে ৫৯৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
এই পতনের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের রেকর্ড ৬৪২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে গেছে ৪৪ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সামগ্রিক রিজার্ভের একটি প্রধান উপাদান বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদের জোগানের নিম্নমুখী গতির কারণে এই পতন ঘটেছে। বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদের মধ্যে ইউরো, পাউন্ড এবং ইয়েনের মতো অ-যুক্তরাষ্ট্র ইউনিটগুলোর মূল্যায়ন বা অবমূল্যায়নের প্রভাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের একটি প্রধান কারণ হলো বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের মূলধনের বহিঃপ্রবাহ।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ মুদ্রানীতি কঠোর করা এবং সুদের হার বৃদ্ধি শুরু করার পর থেকে ভারতের পুঁজিবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ২১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার তুলে নেয়। গত মার্চে সবচেয়ে বড় পতন হয়েছিল যখন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৬ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অন্যান্য মুদ্রার অবমূল্যায়ন ছাড়াও তেল ও পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডলারের চাহিদাও বেশি ছিল। মার্কিন ডলারের তুলনায় রুপির মূল্য কমে যাওয়া এবং সোনার দামের পতনও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের একটি ভূমিকা পালন করেছে।
শুক্রবার রুপি ৫৭ পয়সা কমে ৭৬ দশমিক ৯৬-এর সর্বনিম্ন মাত্রা ছুঁয়েছিল; যা ৭৬ দশমিক ৯৭-এর সর্বকালের সর্বনিম্ন মাত্রা থেকে সামান্য নিচে।
তবে পুঁজিবাজার বন্ধের সময় ডলারের বিপরীতে রুপির দাম ছিল ৭৬ দশমিক ৯২। যদি রুপির মূল্য আরও নিচে নামে, তাহলে আরবিআই তার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে, যা মোট বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চায় না যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামুক।