ইউরোপের তিনটি দেশে ঝটিকা সফর শুরু করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
চলতি বছরে এটিই তার প্রথম বিদেশ সফর। সোমবার ভোরে তিনি পৌঁছেন জার্মানির রাজধানী বার্লিনে। সন্ধ্যায় দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন তিনি। সেখান থেকে তিনি যাবেন ডেনমার্ক ও ফ্রান্স।
আগামী আড়াই দিনে সাতটি দেশের আটজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এর বাইরে ৫০ জন বিশ্ব ব্যবসায়ী নেতার সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি।
সফরটি এমন একসময়ে হচ্ছে যখন রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ ইউরোপসহ বৈশ্বিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
জার্মানি ইউরোপে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, যাদের সঙ্গে ভারতের গভীর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নেও জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ সেখানে দুই নেতার জি-সেভেন শীর্ষ বৈঠক নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে।
জার্মান সরকারের সূত্র উদ্ধৃত করে সে দেশের সংবাদমাধ্যমের দাবি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে মস্কোকে আরও বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যেই জি-সেভেন শীর্ষ বৈঠকে মোদিকে আমন্ত্রণের কৌশল নিতে চলেছেন ওলাফ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনও সরাসরি কোনো পক্ষ নেয়নি নয়াদিল্লি। তবে ইউক্রেনের বুচায় রুশ সেনারা গণহত্যা করেছে এমন অভিযোগ ওঠার পর এর নিন্দা করেছেন জাতিসংঘে ভারতের প্রতিনিধি।
রাশিয়া নিয়ে জাতিসংঘে আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বের নিন্দা প্রস্তাবে ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছে ভারত।
যুদ্ধের আবহে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে এসে তেল বিক্রি নিয়েও আলোচনা করেছেন। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলোর জারি করা আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় সায় দেয়নি ভারত।
মোদির সরকারের এই ‘ভারসাম্যের কূটনীতি’ নিয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন।
জার্মানিতে সফর শেষে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসেনের আমন্ত্রণে মোদি যাবেন দেশটির রাজধানী কোপেনহেগেন। সেখানে দ্বিতীয় ভারত-নর্ডিক সামিটেও অংশ নেবেন তিনি।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে দুই নেতার মধ্যে ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারত্ব স্তরে উন্নীত হয়েছিল।
ফ্রেডরিকসেন ২০২১ সালের ৯ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে ছিলেন, সেটা ছিল মহামারির পর থেকে বিদেশি সরকারপ্রধানের প্রথম সফর।
এরপর ফ্রান্স যাবেন মোদি। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর এই সফরের পরিকল্পনা করা হয়।
ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ফ্রান্সও সেই কয়েকটি পশ্চিমা দেশগুলোর একটি, যারা ১৯৯৮ সালে পোখরানের পরমাণু বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের পর ভারতের নিন্দা করেনি।
ফ্রান্স জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ভারতের দাবিকে সমর্থন করে চলেছে।