বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কৃষ্ণ সাগরে পুতিনের ডলফিন বাহিনী

  •    
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২২ ২১:১৩

স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন স্তন্যপায়ী সামদ্রিক প্রাণীদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে। প্রশিক্ষিত এসব প্রাণী সেনাদের মতো টহল দেয়। সমুদ্রের কোনো এলাকায় মাইন কিংবা ডুবুরি দেখতে পেলে তাদের প্রশিক্ষককে অবহিত করে।

ইউক্রেন থেকে ছিনিয়ে নেয়া ক্রিমিয়া অঞ্চল রক্ষায় কাজ করছে রাশিয়ায় প্রশিক্ষিত ডলফিন। কৃষ্ণ সাগরের সেভাস্টোপল বন্দরে এগুলো অবস্থান করছে। স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণে এ দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী পরিচালিত সংবাদ সংস্থা- ইউএসএনআই নিউজের বিশ্লেষক এইচ আই সাটন।

তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষিত সামরিক ডলফিনগুলোকে কৃষ্ণ সাগরের সেভাস্টোপল বন্দরে পাঠিয়েছে রাশিয়া৷ ফেব্রুয়ারিতে যখন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া, সে সময়ে এগুলো এখানে এসেছিল।’

স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন স্তন্যপায়ী সামুদ্রিক প্রাণীদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে। প্রশিক্ষিত এসব প্রাণী সেনাদের মতো টহল দেয়। সমুদ্রের কোনো এলাকায় মাইন কিংবা ডুবুরি দেখতে পেলে তাদের প্রশিক্ষককে অবহিত করে।

কৃষ্ণ সাগরের সেভাস্তোপল বন্দর রাশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ওডেসার মতো গুরুত্বপূর্ণ বন্দরসহ ইউক্রেনের দক্ষিণ সীমান্তে প্রবেশের পথ।

রাশিয়া যদি ওডেসা দখলে নেয়, তবে বাণিজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে কিয়েভ। সেই সঙ্গে ইউক্রেনের পশ্চিম অংশে সহজেই ঢুকে পড়তে পারবে রুশ সেনারা। এই চেষ্টা অবশ্য ইতোমধ্যে করেছে রাশিয়া। তবে দখলে নিতে পারেনি

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৭০টি ডলফিন এবং ৩০টি সিল কৌশলগত অবস্থানগুলো রক্ষার কাজ করছে।

রাশিয়ার বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য না থাকলেও এটা নিশ্চিত যে তাদেরও প্রশিক্ষিত তিমি ও ডলফিন রয়েছে। নরওয়ের উপকূলে ক্যামেরাযুক্ত একটি সাদা বেলুগা তিমির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল ২০১৯ সালে। রাশান এই তিমিটিকে অনেকে গুপ্তচর বলে দাবি করেছিল। পরে স্থানীয়রা এটির নাম দেন হাভালদিমির। সরিয়ে নেয়া হয় ক্যামেরাটি।

আর্কটিকে অঞ্চল বাড়ানোয় গত কয়েক বছরে রাশিয়া সামরিক সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংখ্যা দ্বিগুণ করেছে। ছোট ছোট বহরে তিমি ও সিলগুলোকে ভাগ করেছে মস্কো।

স্যাটেলাইটের ছবিতে আর্কটিকের ওলেনিয়া গুবা নৌঘাঁটিতে বেলুগা তিমির উপস্থিতি রয়েছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়ানোর পর ২০১৮ সালে ভূমধ্যসাগরে ডলফিন মোতায়েন করেছিল রাশিয়া।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক সামুদ্রিক প্রাণীরা বন্দর রক্ষা এবং মাইন শনাক্তে দারুণ কার্যকর। যুক্তরাষ্ট্র ডলফিন ও সিলগুলো শত্রু ডুবুরিদের চেনার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে প্রথম সামদ্রিক প্রাণী ব্যবহার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

“প্রথমে শত্রু সাঁতারুকে এরা লক্ষ্য করে। তারপর এরা তার প্রশিক্ষকের কাছে ফিরে তা জানায়। তখন প্রশিক্ষক সুতা লাগানো একটি ভাসমান বস্তু ডলফিনকে মুখে লাগিয়ে দেয়। পরে ডলফিনটি শত্রুর কাছে ফিরে তার গায়ে সেটি সেপ্টে দিয়ে চলে যায়। পানির ওপরে তখন ভাসমান বস্তুটি দেখে শত্রুর অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়।”

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সিলগুলো অগভীর জলে অনুপ্রবেশকারী শনাক্তকরণ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ কাজে স্প্রিংযুক্ত এক ধরনের হুক ব্যবহার করে এগুলো। শত্রুর শরীরের সঙ্গে ঘেঁষে সেই হুকটি মুখের সাহায্যে তার পায়ে আটকে দেয় প্রশিক্ষিত সিলগুলো।

পেন্টাগন (যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর) অবশ্য এসব অস্বীকার করে আসছে। তবে নেভি সিল এবং সাবেক ডলফিন প্রশিক্ষকরা বলছেন, মাথায় বড় সিরিঞ্জ বহনকারী অস্ত্রযুক্ত ডলফিনের অস্তিত্ব আছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, প্রাণীগুলো সিরিঞ্জে থাকা পদার্থ পুশ করে ডুবুরিকে হত্যা করে।

ব্রিটিশ এক ডলফিন বিশেষজ্ঞ একবার সেভাস্টোপলে রাশিয়ান সামরিক ডলফিন দেখতে গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি কিছু ডলফিনকে সাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেখানেই সোভিয়েত আমলের অস্ত্রের কিছু নথি হাতে পান তিনি।

এসব নথি অনুযায়ী, ডলফিনের মাথায় ৩০০০ পিএসআই কার্বন ডাই-অক্সাইডের একটি সিরিঞ্জ যুক্ত করে দেয়া হয়। এগুলো শত্রুর সঙ্গে খেলার ছলে এক সময় শরীরে পুশ করে দেয়। পানির তলায় এই চাপ নিতে না পেরে ফেঁটে যেত গুপ্তচর ডুবুরির শরীর।

ওই বিশেষজ্ঞ পরে বলেছিলেন, ‘যদি আমি নিজেই প্রমাণ না দেখতাম তবে এটি বিশ্বাস করতাম না। আমি অবাক হয়েছিলাম যে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে তারা কতটা খোলামেলা এবং সৎ ছিল।’

এ বিভাগের আরো খবর