ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। রাশিয়ার দাবি দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশ ভাষাভাষীদের রক্ষার জন্য এবং ইউক্রেনকে অসামরিকীকরণ ও নব্য নাৎসিমুক্তকরণের জন্যই এই অভিযান। তবে পশ্চিমা কোনো দেশ রুশ অভিযানকে মেনে নিতে পারেনি। ইউক্রেনে সেনা না পাঠালেও দেশটিতে সমরাস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো।
এমন পরিস্থিতিতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সত্যিই ইউক্রেন সংকটের সমাধান চায়, তবে তাদেরকে জেগে উঠতে হবে এবং কিয়েভকে সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ বন্ধ করতে হবে।’
এর আগে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের কারণে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা ইন্টারফেক্সকে সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘বিপদ (বিশ্বযুদ্ধের হুমকি) গুরুতর, বাস্তব, আপনি একে অবজ্ঞা করতে পারেন না।’
যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ কয়েক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ইউক্রেনে সরবরাহ করছে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ইউক্রেনকে ৩৩ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যেই অর্থের অধিকাংশই ব্যয় হবে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তায়।
ক্রেমলিন বরাবরই ওয়াশিংটনকে ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে বারবার সতর্ক করে আসছে।
বুধবার সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তরের এক শহরে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলোচনার সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, বাইরের কোনো দেশ (পশ্চিমা) ইউক্রেনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে বিদ্যুৎগতিতে দ্রুত জবাবের মুখোমুখি হবে।
রাশিয়ার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে পুতিন বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন সব অস্ত্র রয়েছে, ফলে কেউই আমাদের সামনে দম্ভ দেখাতে পারবে না। প্রয়োজনে আমরা সেগুলো ব্যবহার করব।’
এ ছাড়া তিনি জানিয়েছেন, বাইরের দেশের হস্তক্ষেপের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা এরই মধ্যে ঠিক করে ফেলা হয়েছে।
যদিও পুতিন সম্ভাব্য রুশ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুতিনের বক্তব্য ইউক্রেনের মিত্রদের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা ইউক্রেন সংঘাতে আর না জড়ায়।