বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবার রুবলে গ্যাস কেনার পথে হাঁটছে জার্মান কোম্পানি

  •    
  • ২৯ এপ্রিল, ২০২২ ১০:৩২

পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধের পর অন্যান্য ইউরোপীয় দেশেও সরবরাহ বন্ধের আশঙ্কায় ইউরোপের জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোও ইউনিপারের দেখানো পথে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। গত মার্চে কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী সাদ আল কাবি বলেছেন, ইউরোপের বাজারে রাশিয়ার গ্যাসের বিকল্প পাওয়া ব্যবহারিকভাবেই অসম্ভব।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুতিনও জানিয়ে দিয়েছিলেন, বন্ধু নয় এমন রাষ্ট্রকে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কিনতে হলে রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এতে অস্বীকৃতি জানানোয় পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন বলছে, জ্বালানিকে কাজে লাগিয়ে ইউরোপকে বিভক্ত করতে চাইছে ক্রেমলিন।

এমন পরিস্থিতিতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির অন্যতম বড় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান ইউনিপার যে পদ্ধতিতে রাশিয়ার জ্বালানির দাম পরিশোধ করতে চাইছে, তাতে রাশিয়ার ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন হতে পারে।

ইউনিপার বলছে, তারা ইউরোতেই মূল্য পরিশোধ করবে। যদিও তা পরে রুবলে পরিবর্তিত হয়ে যাবে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আলোচনায় ক্রেমলিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার মুদ্রাতেই মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধের পর অন্যান্য ইউরোপীয় দেশেও সরবরাহ বন্ধের আশঙ্কায় ইউরোপের অন্যান্য জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোও ইউনিপারের দেখানো পথে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে।

ইউনিপার বলেছে, ‘আমাদের হাতে বিকল্প কোনো উপায় নেই। আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য এবং পুরো জার্মানির জন্য আপাতত রুশ গ্যাসের কোনো বিকল্প নেই; অন্যথায় তা আমাদের অর্থনীতির ওপর নাটকীয় প্রভাব ফেলবে।’

একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তারা এখনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছে।

জার্মানির অন্যতম বড় জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আরডব্লিউই কীভাবে রাশিয়ার গ্যসের মূল্য পরিশোধ করেছে, তা জানাতে অস্বীকার করেছে।

এদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম রুবলে দিতে অস্বীকার করায় ২৬ এপ্রিল থেকে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া।

পোল্যান্ডের রাষ্ট্রচালিত গ্যাস ফার্ম পিজিনিগ জানিয়েছে, ইয়ামাল পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ স্থগিত করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

রুশ প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের পক্ষ থেকে পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।

যদিও প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র সের্গেই কুপ্রিয়ানভে অবশ্য আগেই বলেছিলেন, পোল্যান্ডকে অবশ্যই রুবলে গ্যাসের মূল্য দিতে হবে, যদিও ওয়ারশ তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।

বুলগেরিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্যাজপ্রমের পক্ষ থেকে বুলগেরিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি বুলগারগাজকে জানানো হয়েছে, বুধবার থেকে দেশটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হবে।

বুলগেরিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলছে, রুবলে মূল্য পরিশোধ অগ্রহণযোগ্য এবং বুলগেরিয়ার জন্য তাতে ‘উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি’ রয়েছে। এরই মধ্যে দেশটি প্রাকৃতিক গ্যাসে রাশিয়ার বিকল্প খুঁজছে।

পোল্যান্ডের জলবায়ুমন্ত্রী আনা মসকওয়া বলেছেন, রাশিয়ার সরবরাহ বন্ধ হলেও পোল্যান্ডে গ্যাসের কোনো ঘাটতি হবে না।

গত মার্চের শেষ দিকে সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের বাজারে রাশিয়ার গ্যাসের বিকল্প পাওয়া ‘ব্যবহারিকভাবেই অসম্ভব।’

সাদ আল-কাবি শুধু কাতারের জ্বালানিমন্ত্রীই নন, তিনি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কাতার এনার্জির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও।

সাক্ষাৎকারে সাদ বলেন, বিশ্ববাজারের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস রাশিয়া সরবরাহ করে। দেশটির তেল-গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা নেই কাতারের। কাতার মনে করে, জ্বালানিকে রাজনীতির বাইরে রাখা উচিত।

এদিকে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ওপর একের পর এক অবরোধ আরোপের জবাবে প্রাকৃতিক গ্যাসকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া। প্রাথমিক অবস্থায় রুশ মুদ্রার মান পুনরুদ্ধারে গ্যাস কূটনীতি ভালোই ফল দিয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞায় বৈদেশিক মুদ্রায় আস্থা হারিয়েছে তারা। তাই ইউক্রেন ইস্যুতে রুশবিরোধী অবস্থান নেয়া দেশগুলোকে রুশ মুদ্রা রুবলের মাধ্যমে গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে হবে।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।

ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।

এ বিভাগের আরো খবর