শ্রীলঙ্কার সাবারাগামুওয়া প্রদেশের রাম্বুকানা শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে পুলিশ, যাতে একজন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাম্বুকানায় বিক্ষোভে গুলি চালানোর ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে শ্রীলঙ্কায়। বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলির ফুটেজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
পুলিশের ভাষ্য, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ‘ন্যূনতম শক্তি’ প্রয়োগ করা হয়েছে, তবে গুলি ছোড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
গুলি ছোড়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতরা।
যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পাওয়া শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারবিরোধী চলমান বিক্ষোভের মধ্যে গুলিতে নিহত হওয়ার খবর এলো।
আমদানির জন্য দরকারি রিজার্ভ না থাকায় শ্রীলঙ্কাজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি, ওষুধ ও বিদ্যুতের তীব্র সংকট দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ।
বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগ চাইছেন। তাদের ভাষ্য, গোতাবায়ার নীতিগত ভুলে শ্রীলঙ্কার এই দশা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখেও পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। স্থানীয় সময় সোমবার তিনি যাদের মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, তাদের নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে লঙ্কানদের মধ্যে।
জ্বালানির আকাশচুম্বী দাম
শ্রীলঙ্কায় খুচরায় জ্বালানি বিক্রির প্রধান প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম প্রায় ৬৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। একই দিনে আটার মতো কিছু খাদ্যদ্রব্যের দামও বেড়েছে। এর প্রতিবাদে ওই দিন দেশটির বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ হয়।
রাম্বুকানায় জ্বালানি তেলের দাবিতে প্রায় ১৫ ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। বিক্ষুব্ধ মোটরসাইকেলচালক ও বাসচালকদের মহাসড়কে টায়ার পোড়াতে দেখা যায়। তাদের এ অবস্থানে কলম্বো-ক্যান্ডি সংযোগ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভের সময় পুলিশের গুলিতে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কমপক্ষে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।
নিহত ব্যক্তির প্রাণহানি গুলিতে হয়েছে বলে ধারণা করছেন কেগল টিচিং হাসপাতালের পরিচালক মিহিরি প্রিয়াঙ্গনী।
তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা গুলিতে আহত হওয়ার কারণে (মৃত্যু হয়েছে) বলে সন্দেহ করছি। প্রকৃত কারণ বের করতে ময়নাতদন্ত দরকার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের মুখপাত্র নিহাল তালদুয়া বিবিসিকে বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি করতে হয়েছিল পুলিশকে। তারা কিছু টায়ারে আগুনও জ্বালিয়েছিল। এ কারণে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে গুলি করতে হয়েছিল।’