ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান থামার কোনো লক্ষণ নেই। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে তুরস্ক। এবার সেই মধ্যস্থতাকারী তুরস্কই তার পার্শ্ববর্তী ইরাকে সামরিক অভিযান শুরু করেছে।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর ইরাকের সীমান্তবর্তী এলাকায় কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) স্থাপনা লক্ষ্য করে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনী।
তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলসি আকার টুইটারে দেয়া এক ভিডিওবার্তায় বলেছেন, সামরিক অভিযানে যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন দিয়ে আকাশপথে হামলা চালানো হয়েছে, এ ছাড়া তুরস্কের কমান্ডো ট্রুপস স্থল অভিযান পরিচালনা করেছে।
আমাদের সংগ্রাম চলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না শেষ সন্ত্রাসীরও পতন না হয়।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল টুইটার পেজে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে তুরস্কের বিমান বাহিনীর এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে ঘাঁটি থেকে উড়তে দেখা গেছে, ড্রোন দিয়ে বিভিন্ন স্থাপনায় বোমাবষর্ণ করতে দেখা গেছে, এ ছাড়া ভিডিওতে অ্যাটাক হেলিকপ্টার ও হুইৎজার থেকে গোলাবর্ষণও করতে দেখা গেছে।
আঙ্কারা দাবি করেছে, তাদের অভিযানে সফলতার সঙ্গে পিকেকের বেশ কয়েকটি বাংকার, সুড়ঙ্গ ও অস্ত্রগুদাম ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া উত্তর ইরাকের পিকেকের প্রধান কার্যালয়ও ধ্বংস করা হয়েছে।
তবে অভিযানে ঠিক কত ধরনের সমরাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে এবং কতজন সেনা অংশ নিয়েছে তা জানানো হয়নি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুলসি আকার জানিয়েছেন, পরিকল্পনামাফিক তুরস্কের সামরিক অভিযান সফলতার সঙ্গে চলছে। অভিযানের প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।
তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, তুরস্ক শুধু ‘সন্ত্রাসী’দের লক্ষ্যবস্তু বানায়। বেসামরিক প্রাণহানি এড়াতে ও ইরাকের ঐতিহাসিক স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম চলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না শেষ সন্ত্রাসীরও পতন না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘৪০ বছর ধরে চলা এই প্লেগ (পিকেকে বোঝাতে) থেকে আমাদের গর্বিত জাতিকে রক্ষা করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
কারা এই পিকেকে
প্রধানত ইরাক, ইরান, সিরিয়া ও তুরস্কে কুর্দিদের বাস। তাদেরই রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। যারা একটি স্বাধীন কুর্দিস্তানের স্বপ্ন দেখে। আঙ্কারার সঙ্গে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সংঘাত চলছে ১৯৮৪ সাল থেকে। এখন পর্যন্ত এই সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
পিকেকে সংগঠনকে তুরস্ক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। যদিও আইএসআইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পশ্চিমাদের বড় মিত্র ছিল কুর্দিরাই।