বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধ্বংসপ্রায় ‘মস্কভার ছবি’ অনলাইনে

  •    
  • ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:২১

গোয়েন্দা তথ্য সম্পর্কিত ওপেন-সোর্স প্ল্যাটফর্ম ওসিনটেকনিক্যাল এক টুইটে বলেছে, ‘আমি ছবির সত্যতা যাচাই করতে পারছি না, তবে এটি একটি স্লাভা শ্রেণির ক্রুজার এবং আমি মনে করি না যে তাদের কাউকে এইভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।’ এ ছাড়াও কিংস কলেজে যুদ্ধ অধ্যয়নে পিএইচডিতে অধ্যয়নরত রব লি ছবিটিকে সত্যিকার ছবিই ভাবছেন।

কৃষ্ণসাগরে ডুবে গেছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুজার মস্কভা। যা রুশ নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগর ফ্লিটের ফ্ল্যাগশিপ ছিল। ইউক্রেনের দাবি, তাদের ছোড়া জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই ডুবে গেছে মস্কভা। রাশিয়া বলছে, জাহাজটির অস্ত্রাগারে আগুন ধরে গেলে বিস্ফোরণ ঘটে। এমন অবস্থায় ক্রুজারটিকে দ্রুত বন্দরে নিয়ে আসার চেষ্টা করলে জাহাজটি ডুবে যায়।

এবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে সমুদ্রে জ্বলছে মস্কভা, এমন একটি ছবি অনলাইন জগতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছবিটি যদিও অস্পষ্ট এবং বিবিসি এর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

তবে সামরিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ছবিটি আসল হতে পারে। কিংস কলেজ লন্ডনের যুদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগের পিএইচডির ছাত্র রব লি এক টুইটে বলেছেন, ‘এটি আসল ছবির মতোই দেখাচ্ছে।’

গোয়েন্দা তথ্যসম্পর্কিত ওপেন-সোর্স প্ল্যাটফর্ম ওসিনটেকনিক্যাল এক টুইটে বলেছে, ‘আমি ছবির সত্যতা যাচাই করতে পারছি না, তবে এটি একটি স্লাভা শ্রেণির ক্রুজার এবং আমি মনে করি না যে তাদের কাউকে এইভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।’

মস্কভা ডুবে যাওয়ার বিষয়ে রুশ ও ইউক্রেনের দাবি সম্পূর্ণ বিপরীত। এরপরেও এই জাহাজডুবি যুদ্ধের গতিপ্রকৃতিতে প্রভাব ফেলেছে। এরই মধ্যে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল রুশিয়া ওয়ানে বলা হয়েছে, মস্কভা ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু হয়ে গেছে।

মস্কভা ডুবে যাওয়ার তাৎপর্য

১২ হাজার ৫০০ টনের আটলান্ট-ক্লাস মিসাইল ক্রুজার এই মস্কভা জাহাজটি রুশ নৌবাহিনীতে সার্ভিস দিয়ে আসছে ১৯৭৯ সাল থেকে। এর মধ্যে রয়েছে ১৬টি অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, টর্পেডো ও গান। কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন আটলান্ট-ক্লাসের এটিই একমাত্র জাহাজ। এ ছাড়া বাকি দুটি মিসাইল ফ্রিগেট ‘মার্শাল উসতিনভ’ ও ‘ভারইয়াগ’ রাশিয়ার নর্দান ও প্যাসিফিক ফ্লিটে মোতায়েন রয়েছে।

দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার (আইওডব্লিউ) বলছে, এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে ইউক্রেনের আঘাতেই মস্কভা ডুবেছে কি না। তবে মস্কভা হারানো সেটা যে কারণেই হোক না কেন, ইউক্রেনের প্রপাগান্ডা ছড়ানোর জন্য এটি বড় বিজয়।

মস্কভা ডুবে যাওয়া রুশ নৌবাহিনীর আত্মবিশ্বাসেও চিড় ধরাবে।

কিন্তু সামরিক বিবেচনায় মস্কভা ডুবে যাওয়াতে রাশিয়ার যুদ্ধ পরিকল্পনায় খুব একটা ব্যাঘাত ঘটার কথা নয়।

এ জাহাজটি ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন ছিল।

আইওডব্লিউ বলছে, মস্কভা সম্ভবত ইউক্রেনের সামরিক সরঞ্জামকেন্দ্রগুলোতে ও বিমানঘাঁটিগুলোতে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে ব্যবহৃত হতো।

এ ধরনের হামলা খুব কাজে দিলেও বিমান হামলা কিংবা ভূমি থেকে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় এর তাৎপর্য খুবই নগণ্য।

রাশিয়ার সামরিক বিশ্লেষক আলেক্সান্ডার খ্রামাচিখিন মস্কভা ডুবে যাওয়াকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘জাহাজটি খুবই পুরোনো। প্রায় ৫ বছর আগে থেকেই একে অবসরে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল।

‘এর প্রকৃত সামরিক মূল্যের থেকেও এর সামগ্রিক মর্যাদা বেশি। স্বাভাবিকভাবেই, বর্তমান সামরিক অভিযানে এর খুব একটা ভূমিকা নেই। এটি ডুবে যাওয়াতেও অভিযানের কোনো প্রভাব পড়বে না।’

মস্কভার ইতিহাস

মস্কভা একটি আটলান্ট-ক্লাস ক্রুজার যুদ্ধজাহাজ। ১৯৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরীর বিরুদ্ধে কার্যকর অস্ত্র হিসেবে এটিকে নকশা করা হয়। এ ছাড়াও দূরবর্তী মোতায়েন সোভিয়েত জাহাজগুলোকে আকাশ প্রতিরক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রেও কার্যকর ছিল।

বিমানবাহী রণতরীর বিরুদ্ধে কার্যকারিতার জন্য এটিকে ‘ক্যারিয়ার কিলার’ হিসেবে ডাকা হতো।

আর মস্কভা, যার নাম ছিল ‘স্লাভা’, তৈরি করাই হয়েছিল ইউক্রেনের মাইকোলাইভের শিপইয়ার্ডে। সময়ের পরিক্রমায় ইউক্রেনই এখন এটিকে ডুবিয়ে দেয়ার দাবি করছে।

১৯৭৯ সালে এটি তৈরি হলেও এর তিন বছর পর এটি সোভিয়েত নৌবাহিনীতে কমিশন পায়। কৃষ্ণসাগর ফ্লিটের এটিই ছিল ফ্ল্যাগশিপ। ১৮৬ মিটার লম্বা জাহাজটিতে ৬২ জন অফিসারসহ ৪৭৬ জন ক্রুয়ের থাকার ব্যবস্থা ছিল।

এ বিভাগের আরো খবর