একের পর এক যৌন হয়রানি ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। এর আঁচ পৌঁছেছে পুলিশ প্রশাসনের দপ্তরেও। তাই এবার নারী নিগ্রহ ঠেকাতে সব নারী পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বিশেষ প্রমীলা বাহিনী গড়তে চলেছে রাজ্য পুলিশ।
প্রশাসন জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশে স্কুটার-আরোহী একটি প্রমীলা বাহিনী রয়েছে। তার নাম ‘উইনার্স’। সেই ধাঁচেই জেলা পুলিশে বিশেষ নারী বাহিনী তৈরি হবে। এর পাশাপাশি রাজ্যে মহিলাবিষয়ক থানার সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে রাজ্য পুলিশের ৪০টি ‘মহিলা থানা’ আছে। শিগগিরই আরও ২০টি থানা বাড়ানো হবে।
রাজ্য পুলিশের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে বসিরহাট ও দার্জিলিংয়ে এই ধরনের নারী পুলিশ বাহিনী আছে। কয়েকটি কমিশনারেটেও রয়েছে। তবে সেখানে আপাতত ১৫ জনের দল রয়েছে। তবে নতুন পরিকল্পনায় প্রতিটি দলে অন্তত ৩০ জন মহিলা পুলিশকর্মী থাকবেন। ধাপে ধাপে ওই বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৮০ থেকে ১০০ জন করার ভাবনা রয়েছে। সরাসরি পুলিশ সুপারের অধীনে থাকবে এই বাহিনী।
কলকাতা পুলিশে উইনার্স’ নামে স্কুটার-আরোহী একটি প্রমীলা বাহিনী রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
তবে অনেকেই বলছেন, রাজ্য পুলিশে এখনও মহিলা কর্মীর সংখ্যা অনেক কম। অফিসার ও কনস্টেবল মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার মহিলা পুলিশকর্মী রয়েছেন বাহিনীতে। এর মধ্যে ইন্সপেক্টর রয়েছেন ২৩ জন। সাব-ইন্সপেক্টর ৩৭০, কনস্টেবলসহ বাকি পদে নারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে আট হাজার। এ ছাড়া হাজার দুয়েক নারী হোমগার্ড ও এনভিএফ রয়েছেন।
প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, আরও প্রায় ১২০০ মহিলা কনস্টেবল নিয়োগের কাজ চলছে। তার পাশাপাশি ১৫০ মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাই নতুন বাহিনী গড়তে সমস্যা হবে না বলেই তিনি মনে করেন।
ওই কর্তা জানান, জেলা সদর কিংবা বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় স্কুটার বা মোটরবাইক নিয়ে টহল দেবেন বাহিনীর সদস্যরা। পার্ক, শপিং মল, বাজার এলাকায় বিশেষ নজরদারি করবেন তারা। স্কুল, কলেজ, হোটেল, রেস্তোরাঁয় নজর রাখবেন। নারী নিগ্রহের ঘটনা পেলেই অভিযুক্তকে পাকড়াও করবে এই বাহিনী।
দুষ্কৃতকারীদের ঘায়েল করার জন্য তাদের মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই যে ক’জন ওই বাহিনীর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তাদের প্রশিক্ষণের কাজও শুরু হয়েছে।