ইউক্রেন অভিযানে রুশ নৌবাহিনীর শক্তিমত্তার প্রতীক যুদ্ধজাহাজ মস্কভা বন্দরের কাছে ডুবে গেছে।
শুক্রবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ অস্ত্রাগারে বিস্ফোরণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রণতরীটি তীরে নোঙর করার সময় সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
তবে ইউক্রেন দাবি করছে কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন রাশিয়ার ফ্ল্যাগশিপে বুধবার ইউক্রেনীয় সেনাদের দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এ সময় রণতরীতে আগুন ধরে যায়।
কিয়েভের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি মস্কো। একই সঙ্গে ইউক্রেনীয় বাহিনীও তাদের দাবির সপক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে পারেনি।
রণতরীতে থাকা ৫১০ ক্রু ও মেরিন সেনাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি রুশ নৌবাহিনীও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
বুধবার ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী জাহাজ মস্কভাতে সফল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তাদের সেনারা।
তবে মস্কো দাবি করে, কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন দেশটির ফ্ল্যাগশিপ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে সক্ষম ক্রুজার ‘মস্কভাতে’ থাকা অস্ত্রগুদামে বিস্ফোরণ হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগুন থেকে এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত। আগুন লাগার পর নাবিকদের নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হলেও বিস্ফোরণে জাহাজের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একটি তদন্তদল এরই মধ্যে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছে।
ইউক্রেন দাবি করছে, বুধবার তাদের দুটি নেপচুন অ্যান্টি-শিপ মিসাইল মস্কভাতে আঘাত হেনেছে।
ইউক্রেনের শহর মারিওপোল অবরোধের ক্ষেত্রে কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন রাশিয়ার ফ্লিটের প্রধান যুদ্ধজাহাজ মস্কভা এর আগে সিরিয়া সংকটের সময়ও ভূমধ্যসাগরে টহল দেয়।
আটলান্টা-ক্লাস মিসাইল ক্রুজার এই মস্কভা জাহাজটি রুশ নৌবাহিনীতে সার্ভিস দিয়ে আসছে ১৯৭৯ সাল থেকে। এর মধ্যে রয়েছে ১৬টি জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও টর্পেডো। কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন এ জাহাজটি ফেব্রুয়ারির শুরুর থেকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে অংশ নেয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।