বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্যায় নাকাল সাউথ আফ্রিকা, মৃত বেড়ে ২৫০

  •    
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২২ ২১:২২

টোঙ্গাট শহরের বাসিন্দা রন নাইডু বিবিসিকে বলেন, ‘বন্যার কারণে তাকে সারা রাত জেগে থাকতে হয়েছে। এটি ভয়ংকর দৃশ্য ছিল। প্রথমবার নদীকে এত উঁচুতে দেখেছি।’

বন্যায় সাউথ আফ্রিকায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫০ ছাড়িয়েছে। কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে ২৪ ঘণ্টায় এক মাসের পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। একে স্মরণকালের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলছেন তারা।

প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধস হওয়ায় অনেক বাড়ি চাপা পড়েছে। সেখানে আটকে আছেন অনেক মানুষ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় আরও বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৈরী আবহাওয়ায় উদ্ধার অভিযান প্রচণ্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে খবর দিচ্ছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। হেলিকপ্টারে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

বুধবার বিবিসি একটি উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে ছিল। বন্যায় সেতু ধসে একটি পরিবারের চার সদস্য নিখোঁজ ছিল। তিনজনকে উদ্ধার করা গেলেও খোঁজ মেলেনি ১০ বছরের এক সন্তানের।

গুরুত্বপূর্ণ এনথ্রি মহাসড়ক বন্যার কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। ডারবানকে গৌতেং প্রদেশের যুক্ত করে এ সড়কটি।

গোটা এলাকা এখনও ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য স্পষ্ট। ডারবান বন্দরের কিছু রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নদীর তীরগুলো কাদায় পূর্ণ, ধ্বংসাবশেষ রাস্তায় জমেছে। এই অবস্থায় বন্দরের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

ব্লাফ পৌর এলাকায় রাস্তায় গাড়ি উল্টে থাকতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও ধ্বংসাবশেষে পিষ্ট আছে গাড়ি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন পাম্প ব্যবহার হচ্ছে।

টোঙ্গাট শহরের বাসিন্দা রন নাইডু বিবিসিকে বলেন, ‘বন্যার কারণে তাকে সারা রাত জেগে থাকতে হয়েছে। এটি ভয়ংকর দৃশ্য ছিল। প্রথমবার নদীকে এত উঁচুতে দেখেছি।’

কোয়াজুলু-নাটাল প্রাদেশিক সরকার ধারণা করছে, সব মিলিয়ে কয়েক বিলিয়ন র‍্যান্ড (সাউথ আফ্রিকার মুদ্রা) মূল্যের ক্ষতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করছে তারা।

ডারবানের মেয়র বিবিসিকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও পানি শোধনাগারগুলো ‘বন্যায় ভেসে গেছে’। ৯০০-এর বেশি সেলফোন টাওয়ার ডাউন হয়ে গেছে। লুটপাটের খবরও পাওয়া গেছে।’

কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্যাকবলিত এলাকাটিকে দুর্যোগ অঞ্চল ঘোষণা করা হলে জাতীয় কোষাগার থেকে ‘প্রদেশটিকে জরুরি তহবিলের জন্য আবেদন করা যাবে, যা পুনর্গঠনের কাজে আসবে।

সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা দুর্যোগকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সর্বোচ্চ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট এই দুর্যোগকে প্রকৃতির শক্তি বললেও দ্বিমত পোষণ করেছেন অনেকে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য তারা দুর্বল ড্রেনেজ এবং ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।

সরকার জনগণকে বন্যায় কবলিত সড়ক ও সেতু এড়িয়ে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে নিচু এলাকায় বসবাসকারীদের দ্রুত নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাউথ আফ্রিকায় স্বাভাবিকের চেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ হয় চলতি বছরের শুরুতেই। ছয় সপ্তাহের ব্যবধানে এই অঞ্চলে আঘাত হেনেছে ছয়টি ঘূর্ণিঝড়, দুটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়।

মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক ও মালাউইকের ওপর দিয়ে গিয়েছিল প্রাকৃতিক এই তাণ্ডব। ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের (ডব্লিউডব্লিউএ) হিসাবে, এতে ২৩০ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

এ বিভাগের আরো খবর