ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদী অস্ত্রধারী বাহিনী আজভ ব্যাটালিয়ন দাবি করেছে, আজভ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মারিওপোলের লড়াইয়ে রুশ সেনারা রাসায়নিক অস্ত্র মোতায়েন ও ব্যবহার করেছে।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে আজভ ব্যাটালিয়ন দাবি করেছে, সোমবার শনাক্ত করা যায়নি এমন একটি রাসায়নিক এজেন্ট ড্রোনের সাহায্যে আজভ যোদ্ধাদের ওপর নিক্ষেপ করে রুশ সেনারা। ফলে যোদ্ধাদের দম বন্ধ হয়ে আসে ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তবে আজভ ব্যাটালিয়নের দাবি এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এরই মধ্যে রাসায়নিক হামলার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
তবে রাশিয়া বলছে, মস্কোকে শাস্তি দিতে পশ্চিমারা আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চায়। তাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের অভিযোগ আনা হচ্ছে, যাতে দেশটির বিরুদ্ধে আরও আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়া যায়।
ইউক্রেনের আজভ ব্যাটালিয়নকে নব্য নাৎসি, উগ্র জাতীয়তাবাদী অস্ত্রধারী গোষ্ঠী হিসেবে মনে করে ক্রেমলিন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘রুশ সেনারা মারিওপোলের বাসিন্দাদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে থাকতে পারে। আমরা এর বিস্তারিত নিশ্চিত হতে মিত্রদের নিয়ে কাজ করছি।
‘এ ধরনের যেকোনো অস্ত্র ব্যবহার সংঘাত বৃদ্ধি করবে এবং আমরা পুতিন ও রুশ শাসকগোষ্ঠীকে জবাবের আওতায় আনব।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ইউক্রেনে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করলে প্রতিক্রিয়া দেখাবে ন্যাটো।
যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে রাসায়নিক অস্ত্র প্রতিরোধী সরঞ্জাম পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। তবে পাঠানো সরঞ্জামের পরিমাণ জানা যায়নি।
গত ১ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছিলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া রাসায়নিক বা জীবাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। এই ধরনের হামলার পর জীবন বাঁচাতে ব্যবহার হয় এমন সরঞ্জাম সরবরাহ করার বিষয় নিয়ে চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মারিওপোলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউক্রেনের নেতারা বলে আসছেন, রাশিয়া সম্ভবত রাসায়নিক বা জীবাণু অস্ত্র ইউক্রেনে মোতায়েন করতে পারে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।