পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা এর পেছনে বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করেছেন দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে।
রোববার দিনভর বিক্ষোভ সমাবেশে হাজারো মানুষকে দেখা গেছে লাহোর, করাচি, শিয়ালকোট, সাহিয়াল ও রাওয়ালপিন্ডিসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে।
ইমরান খানের বানি গালা বাসভবনে বিদায়ী ক্ষমতাসীন দল পিটিআইয়ের নির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে এমন বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শহরগুলোতে।
ইমরানের মন্ত্রিসভার সদস্য সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী হাম্মাদ আজহার বলেন, ‘দেশজুড়ে চলা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আজও (সোমবার) চলবে।
ইমরান খান তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে বিক্ষোভের অন্তত ১০টি ছবি শেয়ার দেন।
সামাজিক যোগযোগমাধ্যমটিতে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘শুকরিয়া পাকিস্তান! আমরা এমন একটি জাতি যারা বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবো। আমরা এমন একটি জাতি যারা ইমরান খানের সঙ্গে থাকবে।’
করাচিতে সবচেয়ে বিশাল সমাবেশটি হয়েছে গুলশান-ই-ইকবালে মিলেনিয়াম মলের বিপরীতে।
এর আগে ইমরান খান দাবি করেন, তার স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বিদেশি শক্তিকে বিক্ষুব্ধ করেছে। তাই এসব আন্তর্জাতিক শক্তি তার প্রধানমন্ত্রিত্বের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব আনতে মদদ ও অর্থ সহায়তা দিয়েছে।
অনাস্থা ভোটের আগে শুক্রবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ইমরান খান আবারও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কূটনীতিক পাকিস্তানের সরকার বদলের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে হুমকি দিয়েছেন।’
এক বিবৃতিতে ইমরান খান ওই কূটনীতিকের নাম উল্লেখ করেন। পাকিস্তানের তখনকার রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খানের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর ওই সহকারী সচিব ডনাল্ড লু ইসলামাবাদের মসনদ থেকে ইমরান খানকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে সরাসরি বার্তা দেন।
তবে ক্ষমতা থেকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের যোগসাজশ রয়েছে- এমন দাবি রোববার পুরোপুরি নাকচ করে দেয় ওয়াশিংটন।
লাহোরে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট লালিক জান চৌক ডিফেন্স ও লিবার্টি মার্কেটের সামনে সমাবেশে অংশ নেন হাজারো বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
পিটিআই কর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন সাধারণ নাগরিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও।
এ সময় তারা দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ ও নির্বাচিত সরকার উৎখাতে বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
বিক্ষুব্ধ জনতা আমদানি করা সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
গুলবার্গ মেন বলিবার্ড ভরে ওঠে বিক্ষোভে অংশ নেয়া নেতাকর্মী, সর্বস্তরের মানুষ ও তাদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে।