বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হিন্দি ভাষার ‘আগ্রাসনে’ সরব বিজেপি বিরোধীরা

  •    
  • ৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৩:২২

বিদেশি ভাষা ইংরেজি সরিয়ে দেশীয় ভাষা হিন্দিকে সরকারি কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য বলেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহে। তার হিন্দি ভাষা নিয়ে করা এই মন্তব্যের একযোগে বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিএম, ডিএমকেসহ একাধিক বিরোধী দল।

ভারতের ঐক্য মজবুত করতে বিদেশি ভাষা ইংরেজি সরিয়ে দেশীয় ভাষা হিন্দিকে সরকারি কাজের ক্ষেত্রে এবং দুজন ভিন্ন ভাষার ভারতীয় কর্মীর যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে হিন্দি ভাষাকে আরও বেশি ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ।

শুক্রবার দিল্লিতে আয়োজিত সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির ৩৭তম বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ সরকারি কাজে হিন্দি ভাষা ব্যবহার করেন। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঠিক করেছেন, সরকারি কাজে সরকারি ভাষা ব্যবহার করতে হবে। এতে হিন্দি ভাষার গুরুত্ব বাড়বে। দেশের সংহতির কাজে সরকারি ভাষা ব্যবহারের সময় এসেছে।’

অমিত শাহ আরও বলেন, ‘যখন দুটি ভিন্ন ভাষার সরকারি কর্মী নিজেদের মধ্যে কথা বলবেন, তাদের ভাষা যেন এদেশীয় হয়, ইংরেজি নয়।’ একই সঙ্গে স্কুলে হিন্দি শেখানোর ওপর জোর দেয়ার কথা বলেন অমিত শাহ।

এরই মধ্যে অমিত শাহের মন্তব্য নিয়ে ভারতজুড়ে বিতর্ক ও নিন্দার ঝড় উঠেছে বিজেপি বিরোধীদের মাঝে।

বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি এক দেশ ও এক ভাষা নীতির কর্মসূচিকে কার্যকর করতে কেন্দ্র জোর করে হিন্দি ভাষাকে ভারতের মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে, যা তামিল, তেলেগু, উর্দু, বাংলাসহ অন্যান্য ভাষার ওপর হিন্দি ভাষার আগ্রাসনের শামিল।

অমিত শাহের হিন্দি ভাষা নিয়ে এই মন্তব্যে একযোগে বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিএম, ডিএমকেসহ একাধিক বিরোধী দল।

তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, ‘হিন্দি ভাষাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। হিন্দি শিল্প-সাহিত্য, হিন্দিভাষী সাধারণ মানুষসহ সবাইকে আমরা ভালোবাসি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেভাবে ভাষা আগ্রাসনের ভয়ংকর ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা আমরা সমর্থন করি না। বিরোধিতা করি। উনি ইংরেজি ভাষার বদলে হিন্দি ভাষা ব্যবহারের কথা বলেছেন। আরেকটি ভাষা ব্যবহার করেছেন, ল্যাঙ্গুয়েজ অফ ইন্ডিয়া। আমি সবিনয়ে মনে করে দিতে চাই, হিন্দি কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রভাষা নয়। আমাদের কোনো রাষ্ট্রভাষা নেই। এখানে বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য।’

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মানুষ কোন ভাষায় কথা বলবে, সেটা ওরা ঠিক করে দিতে চায়। এর বিরুদ্ধে আমরা বামপন্থিরা লড়াই করছি।’

তবে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘উনি ভুল কী বলেছেন? এই তো নেদারল্যান্ডস থেকে ফিরলাম। ওখানে বিভিন্ন ভাষার ভারতীয়দের সঙ্গে কথা হলো। সবাই তো হিন্দিতে কথা বললেন।’

কর্ণাটকের কংগ্রেস নেতা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া টুইট করে বলেন, ‘কর্ণাটকের বাসিন্দা হিসেবে অমিত শাহের মন্তব্যের আমি তীব্র বিরোধিতা করছি। হিন্দি আমাদের জাতীয় ভাষা নয়। সেটা আমরা কোনো দিন হতে দেব না।’

পশ্চিমবঙ্গ থেকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হিন্দি দিয়ে পেট ভরবে তো? মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্বসহ সব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থেকে মুখ ঘোরাতে এখন হিন্দি নিয়ে পড়েছে ওরা।’

এর আগে বিজেপির ‘এক দেশ, এক ভাষা’ এজেন্ডা কার্যকর করার লক্ষ্যে একমাত্র হিন্দি ভাষাই দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে- অমিত শাহের এমন মন্তব্যে ২০১৯ সালেও দেশজুড়ে বিতর্ক প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল। পরে বিরোধীদের চাপের মুখে পড়ে সে সময় নতি স্বীকার করেন অমিত শাহ।

এ বিভাগের আরো খবর