পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ফারাহ খান দেশ ছেড়ে দুবাইতে চলে গেছেন। এরই মধ্যে উড়োজাহাজে তার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে।
হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজে থাকা ফারাহ খানের যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে, সেখানে তার যেই হ্যান্ডব্যাগটি দেখা যাচ্ছে তার মূল্য ১ কোটি ৬৬ লাখ রুপি (৯০ হাজার ডলার), এমন দাবি করা একটি পোস্ট টুইটারে শেয়ার করেছেন পিএমএল-এনের নেতা ও পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী মেফতা গিল।
দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির ঘনিষ্ঠ ফারাহ খানকে দেশত্যাগের অনুমতি দেয়া হয়েছে, এমন অভিযোগের মধ্যেই ফ্লাইটে বসে থাকা ফারাহ খানের ছবিটি ভাইরাল হয়।
ফারাহ সব অপকর্মের জননী
এর আগে ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের বহিষ্কৃত নেতা আলিম খান বলেন, ‘বুশরা বিবির সহযোগী (ফারাহ খান) গ্রেপ্তার আতঙ্কে পাকিস্তান ছেড়ে পালিয়েছেন।’
পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, ফারাহ রোববার দুবাইয়ের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। ফারাহ খানের স্বামী আমিরাতেই বসবাস করেন।
বুশরা খানের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী হিসেবে পরিচিত ফারাহ খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো-জারদারি ও মুসলিম লীগ-নওয়াজের ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ বেশ কয়েকবারই ফারাহ খানের নাম উল্লেখ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন।
মরিয়ম নওয়াজ, যিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা, ফারাহ খানের বিষয়ে বলেছেন, ‘ফারাহ সব অপকর্মের জননী।’
এদিকে ফারাহ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের জবাবে ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শেহবাজ গিল বলেছিলেন, বিরোধীরা সমালোচনার কারণ খুঁজে না পাওয়ায় বুশরা বিবির বান্ধবী ফারাহকে টার্গেট করতে শুরু করেছেন।
শেহবাজ বলেছিলেন, ফারাহ কোনো সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই, এমনকি পিটিআইতে তার কোনো পদ নেই।
শুধু ফারাহ খানই নন, পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় তেহরিক-ই-ইনসাফের অনেক নেতাও দেশ ছাড়ছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি পত্রিকা এক্সপ্রেস।
এর আগে প্রধানমন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে ইমরান খান জয়ী হবেন কি না, সে প্রশ্নে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ভোট ছিল রোববার।
অধিবেশনের শুরুতেই ওই প্রস্তাব খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাশিম সুরি। ব্যাপারটিকে তিনি আখ্যা দিয়েছেন ‘অসাংবিধানিক’ বলে। অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী ইমরান উপস্থিত ছিলেন না।
ফারাহ কোনো সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই, এমনকি পিটিআইতে তার কোনো পদ নেই।
ষড়যন্ত্রের কারণে এই প্রস্তাব তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন কাশিম সুরি। পরে অধিবেশন মুলতবি করেন তিনি। একপর্যায়ে বিরোধী দলগুলোর তোপের মুখে পড়তে হয় তাকে। স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান বিরোধীরা। হট্টগোল তৈরি হয়।
এর আগে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের আগে সকালে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। নেয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশ শাসনে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির জন্য অধিবেশন ডাকতে স্পিকার আসাদ কায়সারের প্রতি লিখিত আবেদন জানান তারা।