বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শ্রীলঙ্কায় বন্ধ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, দেশজুড়ে কারফিউ

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২২ ১০:১৫

প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো নাগরিক ঘরের বাইরে যেকোনো সড়ক, পার্ক, সমুদ্রসৈকত, রেলস্টেশনে যেতে পারবেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

শ্রীলঙ্কায় তীব্র আন্দোলন সামাল দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছে। শনিবার ভোর থেকে কার্যকর হয় কারফিউ।

প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো নাগরিক ঘরের বাইরে যেকোনো সড়ক, পার্ক, সমুদ্রসৈকত, রেলস্টেশনে যেতে পারবেন না।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ফেসবুক, টুইটারসহ গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা পাঠানোর অ্যাপস দেশটিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভুল তথ্য ও গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এর আগে শুক্রবার, অর্থনৈতিক সংকটে তৈরি হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থামাতে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। ফলে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে কোনো ধরনের বিচার ছাড়াই দীর্ঘ মেয়াদে আটক রাখার সুযোগ দেয়া হয় দেশটির সেনাবাহিনীকে।

বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচার ছাড়াই আটক রাখার সুযোগ দেয়া হয় শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীকে। ছবি: বিবিসি

মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অনেক নাগরিক হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধের ঘোষণাও পেয়েছেন মোবাইলে পাঠানো ম্যাসেজের মাধ্যমে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানী কলম্বোতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ করার জেরে এমন কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এর পরই দেশটিতে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন করা হয়। এখন সেনারা কোনও পরোয়ানা ছাড়া যেকোন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এর আগে সরকার থেকে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের পদত্যাগ দাবিতে কলম্বোয় বিক্ষোভ শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা গোটাবায়ার বাসভবন ঘেরাও করে ফেলে। সেখানে তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার থেকে সন্ধ্যাকালীন কারফিউয়ের ঘোষণা দেয় সরকার। পরে সেটি প্রত্যাহার করা হয়। এর মধ্যেই এই জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিলেন গোটাবায়া।

পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ৫৩ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন ফটো সাংবাদিক রয়েছেন। এদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে পুলিশ।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে যা হচ্ছে

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দুই কোটি জনসংখ্যার এই দেশটিতে নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে বিপর্যস্ত জনজীবন।

আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি, দুর্বল সরকারি অর্থব্যবস্থা এবং করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি দেশটির এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। এতে লঙ্কান সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের খাত পর্যটনশিল্প ধসে পড়েছে, রেমিট্যান্স পৌঁছেছে তলানিতে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ নেমে এসেছে দুই বিলিয়ন ডলারে।

গত কয়েক বছর শ্রীলঙ্কার রাজনীতি বেশ টালমাটাল ছিল। এই অবস্থায় দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে। ২০২০ সালে শুরুর দুই মাসে রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমে যায়।

ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারে! শুধু তা-ই না, বছরের বাকি সময়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিতে হয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকারকে।

প্রায় ৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ মেটানোর জন্য রিজার্ভের ডলার বাঁচাতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। এরপর থেকেই দেশটিতে সংকট বাড়তে থাকে।

এসব সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতিকে দায়ী করছেন বিক্ষোভকারীরা।

এ বিভাগের আরো খবর