বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিটকয়েনে গ্যাস বিক্রির চিন্তা রাশিয়ার

  •    
  • ২৫ মার্চ, ২০২২ ১৩:০২

যদি রাশিয়া তেল-গ্যাস বিক্রির ক্ষেত্রে বিটকয়েন ব্যবহার শুরু করে তাহলে রাশিয়াই হবে প্রথম কোনো বৃহৎ দেশ যারা রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার শুরু করবে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারী ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। সঙ্গে সঙ্গেই পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার ওপর অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করে। ফলে, ব্যবসা ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেশটির ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে দেশটি।

এবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কয়েকটি দেশে তেল-গ্যাস বিক্রির ক্ষেত্রে রাশিয়া বিটকয়েন ব্যবহার করতে পারে। এ ছাড়াও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো নিজস্ব মূদ্রায় তেল-গ্যাসের মূল্য পরিশোধের সুযোগ পাবে।

রাশিয়ার জ্বালানি শক্তি সংক্রান্ত দুমা কমিটির প্রধান পাভেল জাভালনি, এ সময় তুরস্ক ও চীনের বিষয় উল্লেখ করেছেন, যারা রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার দেয়ার ক্ষেত্রে জড়িত নয়।

যদি রাশিয়া তেল-গ্যাস বিক্রির ক্ষেত্রে বিটকয়েন ব্যবহার শুরু করে তাহলে রাশিয়াই হবে প্রথম কোনো বৃহৎ দেশ যারা রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার শুরু করবে।

মূলত বিটকয়েন হলো এক ধরনের অনলাইন মুদ্রা বা জিডিটাল কারেন্সি। ২০০৯ সালে এটি উদ্বোধন করেন উদ্ভাবক সাতোসি নাকামোতো (ছদ্মনাম)। তবে অস্ট্রিলীয় নাগরিক ক্রেগ রাইটসও নিজেকে বিটকয়েনের উদ্ভাবক বলে দাবি করেন।

এই মুদ্রা তৈরি হয় ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে। ফলে বিটকয়েন মাইনিং-এর ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিমাণ কম্পিউটিং সক্ষমতার প্রয়োজন হয়। এটি ব্লকচেইন প্রযুক্তির হওয়ায় ইমিউটিবল লেজার অনুসরণ করে। তাই জাল মূদ্রার মত বানানোর সুযোগ নেই। সেই অর্থে বিটকয়েন জালিয়াতি অসম্ভব। এটি পিটুপি লেনদেন সমর্থন করে। অর্থ্যাৎ একজনের ব্যক্তিগত ওয়ালেট থেকে আরেকজনের ব্যক্তিগত ওয়ালেটে মুদ্রা বিনিময় হয়। ফলে এই মুদ্রার লেনদেনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা বা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা অসম্ভব।

এদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান নিয়ে যেসব পশ্চিমা দেশ রুশবিরোধী অবস্থান নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে রাশিয়া। এবার ডলারে নয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া দেশগুলোকে রুশ মুদ্রা রুবলেই রাশিয়ার গ্যাস কিনতে হবে। এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে মস্কো।

যুদ্ধ শুরুর পর রুশ মুদ্রা রুবলের মান কমতে থাকলেও নতুন সিদ্ধান্তে বুধবার থেকে রকেটের গতিতে বাড়ছে রুবলের দাম।

বুধবারই সর্বশেষ তিন সপ্তাহে ডলারের বিপরীতে রুশ মুদ্রার দাম সর্বোচ্চ হয়েছে। এরই মধ্যে ১ ডলারের বিপরীতে ১০০-এর নিচে নেমে ৯৫-এ স্থির হয়েছে রুবল। ইউরোর বিপরীতেও দাম বেড়েছে ৩.৫ শতাংশ। প্রতি ইউরো এখন বিনিময় হচ্ছে ১১০.৫ রুবলে।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে এই মাসের শুরুর দিকে রুশ মুদ্রা রুবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবনমন হয়েছিল। গত মার্চের ৭ তারিখে প্রতি ডলারে ১৩২ রুবল ও ইউরোতে ১৪৭ রুবলে নেমে আসে। যেখানে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ডলারের বিপরীতে ছিল ৭৫ রুবল ও ইউরোর বিপরীতে ছিল ৮৫ রুবল।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ রুশ সম্পদ জব্দ করার অবৈধ সিদ্ধান্তের কারণে তাদের মুদ্রার ওপর আস্থা নষ্ট হয়েছে। তাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া দেশগুলোকে রুবলে গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে হবে।

এ-সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। বেঁধে দিয়েছেন ১ সপ্তাহ সময়।

যদিও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। পুতিন জানিয়েছেন, চুক্তিতে নির্ধারিত মূল্যতেই গ্যাস সরবরাহ করবে রাশিয়া। শুধু অর্থ প্রদানে মুদ্রার পরিবর্তন হবে।

তবে শুধু গ্যাসের বিষয়েই নয়। পুতিন বলেন, ‘আমাদের পণ্য ইইউ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে ডলার বা ইউরোতে লেনদেনের কোনো মানে হয় না।’

এদিকে বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেগাওয়াট গ্যাসের দাম ৯৭ ইউরো থেকে বেড়ে ১০৮.৫ ইউরোতে পৌঁছায়। রুশ প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর তা আরও ১০ ইউরো বেড়ে যায়।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইইউসহ তাদের মিত্র দেশগুলো মস্কোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, লেনদেনে ডলার এবং ইউরো সীমিত করেছে। বিদেশে রাশিয়ার ৩০০ বিলিয়ন ডলার জব্দ করা হয়েছে। যদিও রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস আমদানি অব্যাহত রেখেছে এসব দেশ।

এ বিভাগের আরো খবর