গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপরই দেশটিতে অভিযান শুরু করে রুশ সেনারা। এর আগেই যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বারবার ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের আশঙ্কা প্রকাশ করছিল। ফলে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা দিয়ে এলেও জার্মানি কোনো ধরনের সমরাস্ত্রগত সহযোগিতা করেনি। বলা যায়, ইউরোপে অন্যান্য দেশের তুলনায় রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক বেশ উষ্ণই ছিল।
কিন্তু ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হলে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে।
প্রেসটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করতে ২ হাজার ট্যাংক প্রতিরোধী অস্ত্র দেবে জার্মানি।
এরই মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী জার্মানির কাছ থেকে ১ হাজার ট্যাংক প্রতিরোধী অস্ত্র ও ৫০০ স্টিংগার টাইপ ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ করার মিসাইল লঞ্চার পেয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংসদীয় সূত্রে এএফপিকে জানানো হয়েছে, ২ হাজার ট্যাংক প্রতিরোধী অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানো হবে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালিনা বায়েরবক বুধবার জার্মান সংসদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরাই ইউক্রেনে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করছি। এই বিষয়টি আমাদের গর্বিত করছে না। বরঞ্চ ইউক্রেনকে সাহায্য করতে আমাদের এমনটা করতেই হতো।’
বায়েরবকের পক্ষ থেকে জানা যায়, আসছে দিনগুলোতে ইউক্রেনে আরও সমরাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে জার্মান সরকার দেশটির অস্ত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আরও সমরাস্ত্র কেনার বিষয়ে আলোচনা করে নিচ্ছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুদ্ধ ও সংঘর্ষ চলছে- এমন এলাকায় অস্ত্র না পাঠানোর নীতি রয়েছে জার্মানির। তবে ইউক্রেন পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে ঐতিহাসিক এই নীতি থেকে সরে এসেছে জার্মানি।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, পুতিনের বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব।
এদিকে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, নতুন করে ৬ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে পাঠাবে তারা। ইউক্রেনে বিবিসির তৎপরতা অব্যাহত রাখতে এবং ইউক্রেনীয় সেনা ও পাইলটদের বেতন দেয়ার জন্য ৪০ মিলিয়ন ডলারও দেবে যুক্তরাজ্য সরকার।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘ইউক্রেনের ভবন ও শহরগুলো যখন রাশিয়া ধূলায় পরিণত করছে, আমরা তখন চপু করে বসে থাকতে পারি না। যুক্তরাজ্য মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে ইউক্রেনকে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা করে যাবে। যাতে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতে পারে।’
সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেন বলে আসছে, রুশ সেনাদের ঠেকিয়ে রাখতে গিয়ে তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ফ্রান্স ও জার্মানির কাছে সমরাস্ত্র সহায়তা চাওয়া হয়েছিল।