বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কর্ণাটকে মন্দির মেলায় মুসলিম দোকানি নিষিদ্ধ

  •    
  • ২৩ মার্চ, ২০২২ ১২:২৫

২০ এপ্রিল নির্ধারিত মহালিঙ্গেশ্বর মন্দিরের বার্ষিক উৎসবের আয়োজকরা মেলার দোকানের নিলামে মুসলিমদের অংশগ্রহণ করতে বাধা দিয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে আয়োজকরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, শুধু হিন্দুরাই ৩১ মার্চ নিলামে অংশগ্রহণের যোগ্য।

দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে বিরোধের জেরে ধর্মীয় বিভেদ আরও গভীর হয়েছে। এবার উপকূলীয় কর্ণাটকে স্থানীয় বার্ষিক মেলা থেকে মুসলিম দোকানিদের নিষিদ্ধ করার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

মেলার আয়োজক কমিটিগুলো মুসলিম মালিকানাধীন দোকানগুলো বাদ দেয়ার জন্য ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলোর চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। এর আগে কর্ণাটক হাইকোর্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার প্রতিবাদে অনেক মুসলিম দোকানি প্রতিবাদের চিহ্ন হিসেবে দোকান বন্ধ করে দিয়েছিল।

কর্ণাটক রাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলের মন্দিরগুলোর বার্ষিক উৎসব সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ছোট ও মাঝারি দোকানগুলো বেশ ভালো পরিমাণ আয় করে থাকে। অতীতে এই জাতীয় উৎসবগুলোতে খুব কমই কোনো সম্প্রদায়ের ব্যাবসায়িক ক্ষতি করেছিল। কিন্তু হিজাবের বিষয়ে হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে মুসলিমদের ডাকা বনধের পর এই অঞ্চলের অনেক মন্দির তার উৎসবে মুসলিমদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

২০ এপ্রিল নির্ধারিত মহালিঙ্গেশ্বর মন্দিরের বার্ষিক উৎসবের আয়োজকরা মেলার দোকানের নিলামে মুসলিমদের অংশগ্রহণ করতে বাধা দিয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে আয়োজকরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, শুধু হিন্দুরাই ৩১ মার্চ নিলামে অংশগ্রহণের যোগ্য।

এদিকে উদুপু জেলার কাউপের হোসা মারগুড়ি মন্দিরে এই সপ্তাহে আয়োজিত বার্ষিক মেলার জন্য ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত নিলামেও মুসলিমদের স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়নি। মন্দির প্রশাসন কমিটির সভাপতি রমেশ হেগড়ে বলেছেন, তারা একটি প্রস্তাব পাস করেছেন, যাতে শুধু হিন্দুরাই স্টল নিলামে অংশ নেয়ার অনুমতি পায়।

হিনু জাগরা বেদিকের ম্যাঙ্গালুরু বিভাফের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কুক্কেহাল্লি বলেছেন, হিজাবের বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ে মুসলিমরা দোকান বন্ধ করায় স্থানীয় মন্দিরের উপাসকরা ক্ষুব্ধ হয়েছিল।

দক্ষিণ কন্নড় জেলায় বাপ্পানাডুই শ্রী দুর্গপামেশ্বরী মন্দিরের বার্ষিক উৎসবের একটি বিজ্ঞাপনের পোস্টারে বলা হয়েছে, ‘যে লোকেরা আইন বা জমিকে সম্মান করে না এবং যারা আমাদের প্রার্থনা করা গরুগুলোকে হত্যা করে এবং যারা ঐক্যের বিরুদ্ধে, তাদের ব্যবসা করার অনুমতি দেয়া হবে না। আমরা তাদের ব্যবসা করতে দেব না।’

ম্যাঙ্গালুরু শহরের পুলিশ কমিশনার এন শশী কুমার বলেছেন, ‘কারা এই পোস্টারগুলো বসিয়েছে আমরা তা খুঁজে বের করছি। যদি পৌর সংস্থা অভিযোগ দায়ের করতে প্রস্তুত থাকে, আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

উডুপি জেলা স্ট্রিট ভেন্ডার (রাস্তার বিক্রেতা) ও ব্যবসায়ী সমিতির সচিব মোহাম্মদ আরিফ বলেছেন, ‘এমন পরিস্থিতি আগে কখনো ছিল না। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রায় ৭০০ নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে, যার মধ্যে ৪৫০ জন মুসলিম। কভিড-১৯-এর কারণে গত দুই বছর আমাদের কোনো ব্যবসা ছিল না। এখন আমরা যখন আবার উপার্জন করতে শুরু করি, মন্দির কমিটিগুলো আমাদের (মেলা থেকে) বাদ দিয়েছে।’

মন্দির কমিটির সভাপতি এসকে মারিয়াপ্পা সাংবাদিকদের বলেছেন যে, ‘কমিটি অতীতে কখনোই সাম্প্রদায়িক ছিল না, কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলি, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার অনেকেই মুসলিম দোকানিদের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেছে। তাই উৎসব সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করার স্বার্থে, মুসলমান দোকানদারদের বাদ দেবার দাবি মেনে নিতে আমরা বাধ্য হয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর