ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা বিশ্ব একের পর এক রাশিয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও তাতে সম্মত নয় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ হাঙ্গেরি।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক হাঙ্গেরির সিদ্ধান্তকে রুশপন্থি অবস্থান বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, সম্ভবত সস্তায় রাশিয়ার গ্যাসসহ ভূমি দখলের আকাঙ্ক্ষা মস্কো ও কিয়েভ সংঘর্ষের বিষয়ে বুদাপেস্টের নীতির পেছনে থাকতে পারে।
যদিও ইরিনা ভেরেশচুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘এমনকি প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত অনেক দেশও হাঙ্গেরির মতো আচরণ করে না।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করে না হাঙ্গেরি, দেশটি ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতেও অস্বীকার করে, এমনকি অন্য দেশ থেকে আসা অস্ত্র তাদের ভুখণ্ড দিয়ে যেতে দেয় না।’
হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ইরিনা অভিযোগ করে বলেন, ‘আসলে তারা সবকিছুতেই না বলে। বুদাপেস্টের সরকারি বক্তব্য পুরোই রুশপন্থি। এমনটা কেন? রাশিয়ার সস্তা গ্যাসের জন্য? নাকি আমাদের ট্রান্সকারপাথিয়া (ইউক্রেনের অঞ্চল) চায়?’
ইরিনা বুদাপেস্টকে সভ্য বিশ্বে যোগদানের আহ্বান জানান। তিনি এ সময় উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও হাঙ্গেরি ভুল মিত্র পছন্দ করেছিল। একই ভুল যেন হাঙ্গেরি আবার না করে।
এর আগে মঙ্গলবার, হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো বলেছিলেন, তার দেশ রাশিয়ার তেল ও গ্যাস নিয়ে দেয়া নিষেধাজ্ঞাসহ যেসব নিষেধাজ্ঞা হাঙ্গেরিরই স্বার্থের ক্ষতি করবে তা সমর্থন করবে না। এমনকি ইউক্রেনে ন্যাটো সেনা পাঠানো ও নো-ফ্লাই জোনের পরিকল্পনার সমর্থন করবে না। কারণ এই ধরনের পদক্ষেপ বড় আকারের যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করবে।
আসলে তারা সবকিছুতেই না বলে। বুদাপেস্টের সরকারি বক্তব্য পুরোই রুশপন্থি। এমনটা কেন? রাশিয়ার সস্তা গ্যাসের জন্য? নাকি আমাদের ট্রান্সকারপাথিয়া (ইউক্রেনের অঞ্চল) চায়?
যদিও হাঙ্গেরির সরকার, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের নিন্দা করেছে এবং কিছু নিষেধাজ্ঞাও সমর্থন করেছে। তবে ইউক্রেনকে যেকোনো ধরনের সামরিক সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব অস্বীকার করে আসছে শুরু থেকেই।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।