পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের রামপুরহাটে সহিংসতার কারণ খুঁজতে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এরই মধ্যে সেখানে ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে প্রত্যাহার করা হয়েছে রামপুরহাট থানার ওসি ও আইসিকে। অপসারণ করা হয়েছে এসডিওকে।
ঘটনার ব্যাপকতা ও বীভৎসতায় তড়িঘড়ি এডিজি, সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংয়ের নেতৃত্বে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করেছে রাজ্য সরকার। এডিজি পশ্চিমাঞ্চল সঞ্জয় সিং এবং জিআইজি, সিআইডি অপারেশন মিরাজ খালিদ ওই দলে রয়েছেন।
মঙ্গলবার নবান্নে এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক। এই ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেয় নবান্ন।
রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রামপুরহাটের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১১ জনকে ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বীরভূমের রামপুরহাটের ঘটনাস্থলে গেছেন। ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে জেলার ৩ জন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।
ঘটনার তদন্তে আগেই সেখানে সিআইডি ও ফরেনসিক দলের তদন্তকারীরা গিয়েছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় ঘটনাস্থলে গিয়েছেন, বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী।
এ দিকে রামপুরহাটের এই মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ ঘটনার জন্য রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে দায়ী করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মোহম্মদ সেলিম আবার দাবি করেছেন, ওই এলাকার কয়লা খাদান বালি খাদানের লুটের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা থেকে গোলমাল ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুনাল ঘোষ অবশ্য এই ঘটনায় টুইট করে জানিয়েছেন, ‘রামপুরহাটের আগুনে মৃত্যু দুঃখের। কিন্তু এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে, যথাযথ তদন্ত হবে।’
সোমবার রাতে রামপুরহাটের একটি গ্রামে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের এক নেতাকে বোমা মেরে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এরপর গভীর রাতে সেখানে কয়েকটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আগুনে পুড়ে ১০ জনের মৃত্যু হয় বলে জানায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্তারা।
অবশ্য স্থানীয়রা বলছে, তারা ১২টি মরদেহ উদ্ধার করতে দেখেছেন।