বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাইডেনে মোহভঙ্গ আমেরিকানদের 

  •    
  • ২২ মার্চ, ২০২২ ০১:০৮

৫৭ শতাংশ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট। ৪২ শতাংশ ভরসা রাখছেন বাইডনের ওপর। বিশ্লেষকরা বলছেন, বেশ কিছু ইস্যুতে রিপাবলকানদের থেকে পিছিয়ে পড়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। এই অবস্থায় কংগ্রসেে ডেমোক্র্যাটদের আধিপত্য হুমকিতে পড়তে পারে।

ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার দল ডেমোক্র্যাটের জনপ্রিয়তা কমেছে। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জরিপ বলছে, ৫৭ শতাংশ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট। ৪২ শতাংশ ভরসা রাখছেন বাইডেনের ওপর।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বেশ কিছু ইস্যুতে রিপাবলিকানদের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। এই অবস্থায় কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের আধিপত্য হুমকিতে পড়তে পারে।

ইমপ্যাক্ট রিসার্চ এবং ফ্যাব্রিজিও, লি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ফার্ম ২ থেকে ৭ মার্চের মধ্যে জরিপটি চালায়। যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে এক হাজার ৫০০ জনকে এর জন্য বাছাই করা হয়।

অর্ধেক উত্তরদাতাদের মতামত নেয়া হয়েছে মোবাইল ফোনে, এক-চতুর্থাংশ ভোটারকে তাদের মোবাইল ফোনে খুদেবার্তায় প্রশ্ন পাঠানো হয়েছিল, পরে তারা ইন্টারনেটে ঢুকে মতামত জানিয়েছিলেন। এক-চতুর্থাংশ ল্যান্ডলাইন ফোনে জরিপে অংশ নিয়েছিলেন।

জরিপে দেখা গেছে, শিক্ষা খাতের উন্নয়ন এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার মতো ইস্যুতে ডেমোক্র্যাটদের জনপ্রিয়তা রিপাবলিনদের তুলনায় কমেছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণিও বাইডেন শাসনে স্বাছন্দ্য নয়।

মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে বাইডেন প্রশাসনের ওপর আস্থা কমেছে জরিপে অংশ নেয়া ৫০ শতাংশ ভোটারের। ২৫ শতাংশ আমেরিকান বলছেন, মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনীতির পরেই গুরুত্ব দেয়া উচিত ইউক্রেনকে।

ভোটারদের একটি বড় অংশ (৬৩%) নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বাইডেন প্রশাসনের কাজে অখুশি। নির্বাচনি প্রচারে বাইডেনের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা।

৪৭ শতাংশ ভোটার বলছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় রিপাবলিকানদের দক্ষতা বেশি। অবশ্য ৩০ শতাংশ ডেমোক্র্যাটদের পক্ষেই থাকছেন।

আগের একটি জরিপে দেখা গেছে, অতি সংক্রামক ওমিক্রনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে যাবতীয় সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটেছিল। জানুয়ারিতে অনেক দোকান ফাঁকা ছিল, পেট্রলসহ বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়ে গিয়েছিল। এসবের কারণে যে মুদ্রাস্ফীতি তৈরি হয়েছে, ১৯৮২ সালের আগে এমন অভিজ্ঞতা আর হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের।

বাইডেনের নির্বাচনি প্রচার দলের অন্যতম সদস্য জন আনজালোন বলেন, ‘নতুন জরিপ ডেমোক্র্যাটদের খুব একটা আশার আলো দেখাচ্ছে না। বরং অবস্থা আগের চেয়েও খারাপ।’

৪৬ শতাংশ আমেরিকান বলছেন, এখন যদি ভোট হয় তবে তারা রিপাবলিকান প্রার্থীকে বেছে নেবেন। ৪১ শতাংশ ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে আছেন। তবে রিপাবলিকানদের পক্ষে সমর্থন বেড়েছে কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিকদের।

সিনেটেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই ডেমোক্র্যাটরা। ৫০-৫০ অবস্থানে আছে তারা। এখন কেবল ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেন।

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের প্রতিবাদে মস্কোর ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন বাইডেন। পাশাপাশি কিয়েভকে সমর্থন জানাতে পশ্চিমাদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার ইউক্রেন ইস্যুতে বাইডেনের ভূমিকার পক্ষে, ৪৪ শতাংশ বিরুদ্ধে। বাইডেন কীভাবে ইউক্রেনের সংকট মোকাবিলা করেছেন সে সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইলে ৪৭ শতাংশ বাইডেনের পক্ষে রায় দেন; ৪৬ শতাংশ বাইডেনের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট।

৮৯ শতাংশ ভোটার বলছেন, তারা ইউক্রেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। রাশিয়ান তেল আমদানি নিষিদ্ধের পক্ষে ৭৯ শতাংশ ভোটারের সমর্থন ছিল; যাদের তিন-চতুর্থাংশ রিপাবলিকান।

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কাকে বেছে নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্পের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন ৫৫ শতাংশ ভোটার। ১৫ শতাংশ ভোটার ট্রাম্প কিংবা বাইডেন, কাউকেই চান না।

৩৬ শতাংশ বাইডেনের ওপর আস্থা রাখছেন; ২৪ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে। চলতি বছরের নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোটার রিপাবলিকান প্রার্থীকে ভোট দেয়ার কথা জানিয়েছেন। ২৯ শতাংশ চাইছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ।

জরিপে দেখা গেছে, ইউক্রেন ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন আমেরিকানরা। যদিও ৩৮ শতাংশ ভোটার বলছেন এই পরিস্থিতিতে ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় রিপাবলিকানরা ভালো ভূমিকা রাখতে পারত। ৩১ শতাংশ অবশ্য তা মনে করছেন না।

ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকা নিয়েও বিভক্তি দেখা গেছে ভোটারদের মধ্যে। ৩৫ শতাংশ ভোটার বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ঠিক কাজই করছে। তবে ৪৬ শতাংশ মনে করছেন, আরও অনেক কিছু করা উচিত বাইডেন সরকারের।

বিভাজন সত্ত্বেও, বিবাদে পক্ষ বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক ঐকমত্য দেখা গেছে জরিপে। মাত্র ৪ শতাংশ ভোটার রুশ প্রেসিডেন্টের অভিযানকে যৌক্তিক মনে করছেন। ৯০ শতাংশ আমেরিকান পুতিনবিরোধী। রাজনৈতিক দলগুলোও এ বিষয়ে একজোট।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির পক্ষে আছেন ৬৫ শতাংশ আমেরিকান। আট শতাংশ মনে করছেন জেলেনস্কি যোগ্য নন।

ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তি আছে। ৫৫ শতাংশ ভোটার বলছেন, ইউক্রেনে আরও সামরিক সহায়তা পাঠানো প্রয়োজন, ৫৫ শতাংশ রাশিয়ার আরও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে।

চীন ইস্যুতে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল জরিপে। ৭৩ শতাংশ ভোটার বলছেন, আমেরিকার অর্থনীতির সবচেয়ে বড় হুমকি চীন। ৫২ শতাংশ বলছেন, আমেরিকার নিরাপত্তায় হুমকি হয়ে উঠছে বেইজিং।

জরিপে আরও দেখা গেছে, সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রিপাবলিকানদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। হিস্পানিক ভোটাররা বলছেন, কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর চেয়ে একজন রিপাবলিকানকে দেখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন তারা।

কৃষ্ণাঙ্গদেরও আস্থা হারিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। নতুন জরিপে ৩৫ শতাংশ ডেমোক্র্যাটকে সমর্থন জানিয়েছে, যা গত নভেম্বর থেকে ৫৬ পয়েন্ট কম। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের প্রতি কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের সমর্থন ২৭ শতাংশ, গত নভেম্বরের জরিপ থেকে যা ১২ পয়েন্ট বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর