পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে দেশটির বিরোধী জোট। বিরোধীদের এই পদক্ষেপ সফল হলে দেশটির রাজনীতি নতুন মোড় নেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ছাড়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সংসদ সদস্যদের একাংশ অবস্থান নিয়েছে বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
পিটিআইয়ের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা জাহাঙ্গীর খান তারিন তার দলের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএল-এন) নেতা রানা ইহসান আফজাল খান এ দাবি করেছেন। জাহাঙ্গীর তারিন এক সময় ইমরানের প্রধান রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন।
ইমরান খানের ক্ষমতার বৈধ মেয়াদ আছে প্রায় ১৭ মাস। ক্ষমতায় আসার পর তারিনের সঙ্গে ইমরানের ঘনিষ্ঠতা কমতে থাকে। সরকারের প্রায় তিন বছরের মাথায় তিনি দলের ভেতর নিজ অনুসারীদের নিয়ে আলাদা একটা দল গঠন করেন।
পাকিস্তানের দুই প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি সরকারের বিরুদ্ধে হাত মেলানোয় গত কয়েক মাসে দেশটির রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে বৈঠকের পর বিরোধী দলগুলো গত ৮ মার্চ ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী, এই নোটিশ পাওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকতে বাধ্য স্পিকার। সে অনুযায়ী তার অধিবেশন ডাকার কথা ২২ মার্চের মধ্যে। অধিবেশন ডাকার তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট নেয়ার বিধান আছে।
এর আগে ক্ষমতাসীন পিটিআই দলের সিনেটর ফয়সাল জাভেদ খান টুইটে জানান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট হতে পারে ২৭ মার্চের পরে।
এদিকে ইমরান সরকারের প্রধান সহযোগী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (কিউ) নেতা পারভেজ এলাহি বুধবার স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘আমার দল জোট ছেড়ে যায়নি বা ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পদক্ষেপকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
যদিও এর আগে তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন জোটে থাকা পিটিআই-এর মিত্ররা বর্তমানে বিরোধীদের দিকে ১০০ শতাংশই ঝুঁকে গেছে।
তবে বুধবার তিনি বলেন, ‘একটি দলের মধ্যে ভিন্ন মত থাকলেও পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’
এক্ষেত্রে মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে পথ বের করতে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন বলে ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
অনাস্থা প্রস্তাবের ঠিক আগে ইসলামাবাদে বিশাল র্যালির আয়োজন করেছেন ইমরান খানের দল। মিত্ররা পাশে না থাকলেও জনগণ তার সঙ্গে আছেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় সেজন্য ২০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ইসলামাবাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জন্য ফ্রন্টিয়ার কনস্ট্যাবুলারি, রেঞ্জার্স ও পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন তিনি।