সাধারণ বোমার মতো শুধু বিস্ফোরণই ঘটায় না, বরং আশপাশে থেকে সমস্ত অক্সিজেন শুষে নেয়। ফলে শ্বাস নিতে না পেরে ফুসফুস ফেটে গিয়ে মৃত্যু ঘটে মানুষের।
নিউক্লিয়ার বোমার পরেই সবচেয়ে ভয়ংকর হিসেবে বিবেচিত এই বোমাকে থার্মোবারিক অস্ত্র বা ভ্যাকুয়াম বোমা বলা হয়। প্রচণ্ড তাপে মানুষের শরীর গলিয়ে ফেলতে পারে এ ধরনের বোমা। ভয়াবহতার বিষয়টি আমলে এনে আন্তর্জাতিক আইনে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে এমন বোমা ফেলার অভিযোগ তুলেছে কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। বিষয়টিকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করে বিচারের দাবিও তুলেছে তারা।
থার্মোবারিক অস্ত্র কী
থার্মোবারিক অস্ত্র ভিকটিমের ফুসফুস থেকে অক্সিজেন শুষে নেয়। এ ধরনের অস্ত্র দুই ধাপে বিস্ফোরিত হয়।
প্রথম বিস্ফোরণের পর এটি আশপাশের জায়গায় প্রাণঘাতী আঘাত হানে। দ্বিতীয় ধাপে এটি বিস্ফোরণ অঞ্চলে বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে দেয়। এতে বড় ধরনের কম্পন তৈরি হয়। এসময় ওই অঞ্চলে কেউ থাকলে তার শরীর গলে গিয়ে বাষ্পে পরিণত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক আইনে বলা হয়েছে, শুধু সৈন্যদের ওপর এ ধরনের বোমা ব্যবহার করা যাবে। কোনোভাবেই বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এই অস্ত্র প্রয়োগ করা যাবে না।
কাদের কাছে আছে এই বোমা
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারতের কাছে থার্মোবারিক অস্ত্র রয়েছে।
ষাটের দশকে বৈরী দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থার্মোবারিক অস্ত্র বানায়। ভিয়েতনাম যুদ্ধে এটি প্রথমবারের মতো প্রয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৯৯ সালে চেচনিয়ায় হামলা চালানোর সময় থার্মোবারিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল রাশিয়া।
২০০১ সালে আল কায়েদার ওপর হামলার কথা বলে আফগানিস্তানে এই অস্ত্র ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে ২০১৭ সালে তালেবান যোদ্ধাদের ওপরও থার্মোবারিক অস্ত্র প্রয়োগ করে দেশটি।
২০১৬ সালে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ওপর থার্মোবারিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে রাশিয়া ও সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে।
ইউক্রেনে কি থার্মোবারিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে রাশিয়া
বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইউক্রেনে থার্মোবারিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। এই দাবির সূত্র হিসেবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কথা বলা হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে থার্মোবারিক অস্ত্র প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি রাশিয়া।
এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওসকানা মারকারোভাও একই অভিযোগ তোলেন। তবে এখন পর্যন্ত ওই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।