কেবল তেল-গ্যাস না, রুশ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবার পেছনে দেশটির অস্ত্র বাণিজ্যের রয়েছে বড় ভূমিকা। বিশ্বে ২০ শতাংশ অস্ত্রের জোগানদাতা মস্কো। ২০১৬-২০২০ সাল পর্যন্ত ৪৫টি দেশে ২৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও এই ব্যবসায় শীর্ষে আমেরিকা।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) হিসাবে রাশিয়ার অস্ত্রের বড় ক্রেতা ভারত। গত পাঁচ বছরে রাশিয়া থেকে ৬.৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে দিল্লি। ভারতের ৪৯.৩ শতাংশ অস্ত্রই রাশিয়ার।
রুশ অস্ত্র কেনার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে চীন। পাঁচ বছরে ৫.১ বিলিয়ন ডলারের রুশ অস্ত্র কিনেছে বেইজিং। এ সময়ে আলজেরিয়া ৪.২ বিলিয়ন, মিশর ৩.৩ বিলিয়ন এবং ভিয়েতনাম ১.৭ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে রাশিয়ার কাছ থেকে।
যেসব অস্ত্র বিক্রি করে রাশিয়া
যুদ্ধবিমান, ইঞ্জিন, মিসাইল, সাঁজোয়া যান এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ নানা অস্ত্র রপ্তানি করে রাশিয়া।
রাশিয়ান অস্ত্র রপ্তানির প্রায় অর্ধেক (৪৮.৬ শতাংশ) আসে যুদ্ধবিমান বিক্রি থেকে। ২০১৬-২০২০ সালের মধ্যে রাশিয়া অন্তত ১৩ দেশে সুখোই এবং মিগ জেটসহ প্রায় ৪০০টি যুদ্ধবিমান বিক্রি করেছে। এসবের অর্ধেকই কিনেছে ভারত। এ ছাড়া পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী সাবমেরিনও রাশিয়া থেকে ইজারা নিয়েছে দিল্লি।
সোভিয়েত যুগের অস্ত্রগুলোকে আধুনিক করে এই ব্যবসায় আধিপত্য ধরে রেখেছে রুশ সরকার। ভূমি থেকে আকাশে আঘাতে সক্ষম অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি রাশিয়ার।
এই অস্ত্রের প্রধান ক্রেতা ভারত, চীন, সিরিয়া এবং তুরস্ক। আরও অনেক দেশ এটি কিনতে মুখিয়ে আছে। এক একটি এস-৪০০ এর জন্য গুনতে হয় ৪০০ মিলিয়ন ডলার।
একে-৪৭: বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় হাতিয়ার
রাশিয়ার অস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে একে-৪৭ বা কালাশনিকভ। ১৯৪০-এর দশকে সোভিয়েত সেনা জেনারেল মিখাইল কালাশনিকভ এটি তৈরি করেন। দাম কম, মজবুত এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য এই অ্যাসল্ট রাইফেলটি ১০০টিরও বেশি দেশের প্রধান অস্ত্র।
‘একে’ বলতে ‘অ্যাভটোম্যাট কালাশনিকোভা’ বোঝানো হয়। আর ৪৭ রাইফেলটি তৈরির সময়কালকে নির্দেশ করে। আনুমানিক ১০০ মিলিয়ন একে-৪৭ রাইফেল অথবা একই ধরনের অস্ত্র ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে।
রাশিয়ায় এক হাজার ৩০০টি অস্ত্র তৈরির প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ২০ লাখ মানুষ। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হলো রসটেক (Rostec)। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০০৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।