ইউক্রেনে রাশিয়া গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন দেশটির ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা। সতর্ক করেছেন রুশ আগ্রাসনের পরবর্তী শিকার হতে পারে ইউরোপ। ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণার জোর আকুতিও জানিয়েছেন ওলেনা।
ইউক্রেনের রুশ অভিযান শুরুর দুই সপ্তাহ পেরোলেও পুতিন বাহিনীকে আটকাতে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসেনি পশ্চিমা বিশ্ব। কিয়েভকে সামরিক সহায়তা আর মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মধ্যেই সীমিত আছে সব পদক্ষেপ। এতে পরিস্থতি বদলাচ্ছে না, প্রাণহানি আর ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছেই।
এ অবস্থায় আবেগঘন এক খোলা চিঠিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে যুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ হয়।
ইংরেজিতে লেখা চিঠির শুরুতে ফার্স্ট লেডি ওলেনা বলেন, ‘সাক্ষাৎকার দিতে অনেকেই আমাকে পীড়াপীড়ি করছিল। তাদের সব প্রশ্নের উত্তর এই চিঠিতে আছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আগ্রাসন বিশ্বাস করা অসম্ভব। শান্তিপ্রিয় দেশ ছিল আমাদের। শহর, গ্রাম সব জায়গা ছিল প্রাণোচ্ছল। আর এখন এখানে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। যদিও রাশিয়া এটিকে বিশেষ অভিযান বলে চালানোর চেষ্টা করছে।'
শিশুদের হতাহতের ঘটনা এই আগ্রাসনের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক উল্লেখ করে ওলেনা বলেন, ‘আট বছরের এলিস প্রাণ হারায় ওখটিরকার রাস্তায়। যখন সে মারা যায়, ওর দাদি বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। ধ্বংসাবশেষের আঘাতে ১৪ বছরের আরসিনি মারা গেছে। ওকে বাঁচানো যায়নি, কারণ তখন সেখানে গোলাগুলি চলছিল। অ্যাম্বুলেন্স আসতে পারেনি।
‘রাশিয়া বলছে তারা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে না। তাই শুরুতে রুশ হামলায় প্রাণ হারানো শিশুদের নাম বলছি।’
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন এবং দেশটির নাগরিকদের দেশপ্রেমকে অবমূল্যায়ন করছেন বলে অভিযোগ ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডির।
তিনি বলেন, ‘ক্রেমলিন কর্মকর্তারা প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন। বুক ফুলিয়ে তারা বলেছিলেন, ইউক্রেনীয়রা ফুল দিয়ে তাদের বরণ করবে, কিন্তু বাস্তবে তাদের দিকে ককটেল ছোড়া হচ্ছে।’
চিঠিতে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোয় বিশ্ববাসীকে ধন্যবাদ জানান ওলেনা। নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করতে পশ্চিমাদের আহ্বান জানিয়ে ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি বলেন, ‘আপনারা আকাশপথ বন্ধ করে দিন, আমরা স্থলভাগ সামলাচ্ছি।’
সংবাদমাধ্যমকে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে চিঠি শেষ করেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা।