পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক হামলার মধ্যে এবার দ্বৈতনীতি নিয়েছে রুশ মিত্রদেশ চীন।
চীনের রেড ক্রস ইউক্রেনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানবিক সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছে।
একই সঙ্গে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে রুশ সামরিক হামলায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিলেও হামলার পক্ষে সাফাই গাইলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
রাশিয়ার সঙ্গে চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ইস্পাতের মতো দৃঢ় উল্লেখ করে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত হবে রুশ হামলাকে মস্কোর নিরাপত্তার প্রশ্নে ন্যায্য অভিযান হিসেবে দেখা।’
সেই সঙ্গে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ হামলায় নিন্দা জানাতে অস্বীকার করেন তিনি। এমন সামরিক হামলাকে পশ্চিমাদের মতো ‘আগ্রাসন’ বলতেও অস্বীকৃতি জানান এই চীনা কূটনীতিক।
ওয়াং বলেন, ‘ইউক্রেন পরিস্থিতির পেছনের কারণগুলো জটিল এবং এগুলো রাতারাতি ঘটেনি।’
এ সময় তিনি ঐতিহ্যগত চীনা উক্তি ব্যবহার করে বলেন, ‘এক দিনে তিন ফুট পুরু বরফ জমাট বাঁধে না।’
দেশটির পার্লামেন্টে বার্ষিক অধিবেশনের পর এক সাইডলাইন সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জটিল সমস্যা সমাধানে দরকার হয় সব পক্ষের সহনশীলতা ও যৌক্তিক বিচারবুদ্ধি। এ ক্ষেত্রে কারোই উচিত হবে না পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য ইন্ধন দেয়া।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার পর প্রথমবারের মতো পশ্চিমাবলয়ের দেশটিতে মানবিক সহায়তা দেয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করেছে কমিউনিস্টপন্থি চীন।
এ সময় চীনের কূটনীতিক বলেন, ‘মানবিক সহায়তার কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে চালানো হবে। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের উচিত হবে না এই কার্যক্রম নিয়েও রাজনীতি করা।’
ইউক্রেনে সামরিক হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে, বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিকসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের সঙ্গে নিরাপত্তা ইস্যুতে একান্তে বৈঠক করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এ সময় এই দুই নেতা কৌশলগত বিষয়ে নিরাপত্তা চুক্তি সই করেন। তারা একমত হন জাতীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতার বিষয়ে এই দুই মিত্রদেশ কখনও একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে না।
চুক্তিতে বলা হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, এই দুই দেশ কৌশলগত বিষয়ে নিজেদের স্বার্থে একযোগে কাজ করবে।