রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ইউক্রেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজারের বেশি আরব শিক্ষার্থী। কোনো বিকল্প না পেয়ে তাদের অনেকে অবস্থান নিয়েছেন পাতাল রেলে। যেভাবেই হোক, দেশে ফিরতে চান তারা।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইউক্রেনে থাকা আরব শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটেছেন প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার দিকে। বাকিরা বাধ্য হয়ে কাটাচ্ছেন অনিশ্চিত জীবন।
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় চেরনিভৎসি শহর থেকে ইরাকি শিক্ষার্থী আলি মোহাম্মেদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে টেলিফোনে বলেন, ‘যুদ্ধ থেকে বাঁচতে আমরা ইরাক ছেড়ে পালিয়েছিলাম...এখন ইউক্রেনে এসে একই পরিস্থিতিতে পড়েছি।’
আলি বলেন, রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর এক দিনে অসংখ্যবার কিয়েভে থাকা ইরাকি দূতাবাসে ফোন করেছেন তিনি, কিন্তু কেউ ফোন ধরেননি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাড়িতে ফেরার দাবি জানাচ্ছি। আমরা উদ্ধারের অপেক্ষায় আছি।’
ইরাক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে সাড়ে পাঁচ হাজার ইরাকির বাস, যার মধ্যে ৪৫০ শিক্ষার্থী রয়েছেন।
ইউক্রেনে আটকে পড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার ২৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী রায়েদ আল-মোদারেসের কণ্ঠেও প্রতিধ্বনিত হয় আলি মোহাম্মেদের আকুতি।
অধিকাংশ সময় একটি স্থাপনার বেজমেন্টে থাকা এই শিক্ষার্থী ফোনে এএফপিকে বলেন, ‘মাত্র ছয় মাস আগে আমি ওদেসায় আসি। আশা ছিল যুদ্ধ থেকে অনেক দূরে নতুন অধ্যায় শুরুর।
‘আমার আশা শেষ হয়ে গেছে। আমি জানি না, কী করব।’
আরব দেশগুলোর মধ্যে ইউক্রেনে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী আছে মরক্কোর। ইউক্রেনে প্রায় ৮ হাজার মরক্কোর শিক্ষার্থী আছে। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিন হাজার মিসরীয় শিক্ষার্থী আছে ইউরোপের দেশটিতে।
গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিলে বাড়ি ফেরার আকুতি জানিয়ে টুইট করেন মরক্কোর শিক্ষার্থী মাজদা।
তিনি বলেন, ‘আমরা সমাধান চাই। কর্তৃপক্ষের অবশ্যই আমাদের জন্য সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
‘আপনারা (মরক্কো কর্তৃপক্ষ) কিসের অপেক্ষা করছেন? এটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।’