বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পরিণতি কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ? 

  •    
  • ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৮:৩৩

চলতি মাসের শুরুতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ওয়াশিংটন ও মস্কোর সেনারা যখন একে অপরের দিকে গুলি ছুড়বে, তখন বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। স্পষ্ট করেছিলেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, ইউক্রেনে সেনা পাঠাবে না আমেরিকা।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউক্রেন সীমান্ত তিন দিক থেকে ঘিরে রেখেছে লক্ষাধিক রুশ সেনা।

সীমান্তে থমথমে অবস্থা থাকলেও এখনও সরাসরি লড়াইয়ে জড়ায়নি পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো ও রাশিয়া। এমনকি রাশিয়া যখন থেকে ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলা শুরু করে, তখন থেকেই দুই মোড়ল আমেরিকা ও ব্রিটেন উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। অল্প সময়ের মধ্যে কিয়েভ থেকে সামরিক প্রশিক্ষক ও উপদেষ্টা সরিয়ে নেয় তারা।

চলতি মাসের শুরুতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ওয়াশিংটন ও মস্কোর সেনারা যখন একে অপরের দিকে গুলি ছুড়বে, তখন বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। স্পষ্ট করেছিলেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, ইউক্রেনে সেনা পাঠাবে না আমেরিকা।

বিবিসির প্রতিনিধি ফ্র্যাংক গার্ডনার এই অবস্থায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কয়েকটি কারণ বের করেছেন। যেমন ‘কে আপনি’, ‘কোথায় আছেন’ এবং ‘পুতিনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে’- এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন এক প্রতিবেদনে। নিউজবাংলার জন্য গার্ডনারের প্রতিবেদন অবলম্বনে লিখেছেন সারোয়ার প্রতীক।

ইউক্রেনে রাশিয়া কী করতে চায়, সেটা কেবল জানেন প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তার ঘনিষ্ঠজনরা। যতক্ষণ রুশ সেনারা না ফিরবে, ততক্ষণ ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও অন্য শহরগুলো অনিরাপদ থাকবে।

ন্যাটোর অনুচ্ছেদ পাঁচ বলছে, জোটের কোনো সদস্যরাষ্ট্র আক্রান্ত হলে তাকে প্রতিরক্ষা দিতে এগিয়ে আসতে বাধ্য ন্যাটো। ইউক্রেন এখনও ন্যাটোভুক্ত হয়নি। তাই রাশিয়ার এই আচরণে তারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারছে না। যদিও কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে পশ্চিমারা।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত বাল্টিক অঞ্চলের দেশ এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিয়েছে আগেই। ২০০৮ সাল থেকে ইউক্রেনও জোটে যোগ দেয়ার চেষ্টা করে আসছে।

রাশিয়ার কাছাকাছি এই দেশগুলো এখন আতঙ্কে। তাদের শঙ্কা, ইউক্রেনে হামলা চালিয়েই থামবে না রাশিয়া। পরবর্তী সময়ে তারা বাল্টিক অঞ্চলে রুশপন্থিদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারে।

এই আশঙ্কা থেকেই সম্প্রতি ন্যাটো পূর্ব ইউরোপের সদস্য দেশগুলোয় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করেছে।

সমর বিশ্লেষকরা বলছেন, যতক্ষণ না রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ না হয়, ততক্ষণ ভয়ের কিছু নেই।

ভুলে গেলে চলবে না যে রাশিয়া ও আমেরিকার আট হাজারের বেশি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে। ভয়টি এই জায়গাতেই। কারণ দেশ দুটির মধ্যে হয়ে যাওয়া নব্বইয়ের দশকের স্নায়ুযুদ্ধের রেশ এখনও দগদগে।

ব্রিটিশ সেনবাহিনীর সূত্র বলছে, ন্যাটোর সঙ্গে লড়াইয়ে যাওয়ার ইচ্ছা নেই পুতিনের। তিনি কেবল বেলারুশের মতো ইউক্রেনকে নিজের আয়ত্তে রাখতে চান।

ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ এখন পুতিনের ওপর নির্ভর করছে। সাবেক কেজিবিপ্রধান পুতিনকে ঠান্ডা মাথার লোক হিসেবেই চেনে বিশ্ব। কিন্তু গত সোমবারের বক্তব্যে তাকে কূটনীতিকের চেয়ে রাগান্বিত স্বৈরশাসক বেশি মনে হয়েছে তাকে।

ন্যাটোকে ‘শয়তান’ অ্যাখ্যা দিয়ে পুতিন সেদিন বলেছিলেন, স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের কোনো অধিকার নেই ইউক্রেনের। এটি উদ্বেগজনক।

ব্রিটেন, আমেরিকা ও জার্মানি এরই মধ্যে রাশিয়ায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আরও ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। প্রতিক্রিয়া না জানালেও এই ঘটনা অবশ্যই কোনো না কোনো উপায়ে প্রতিশোধ নেবে রাশিয়া।

‘এটি হতে পারে সাইবার হামলা, যা এরই মধ্যে হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। ব্যাংক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এমনকি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অবকাঠামোগুলো আরও হামলার শঙ্কায় রয়েছে।’

এই অবস্থায় রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমের পারস্পরিক আস্থা প্রায় শূন্যে পৌঁছেছে। এখন ইউক্রেন ইস্যুতে বিশ্ব কাকে দায়ী করবে, তার ওপর নির্ভর করবে যুদ্ধ কত দূর গড়াবে।

এ বিভাগের আরো খবর