বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

একেই বলে ‘শীতে জমাট’

  •    
  • ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৪:৩১

রেমি লিন্ডহোম বলেন, ‘আপনারা শুধু অনুমান করে নিন তখনকার অবস্থা। আমি যখন ফিনিশ লাইনে পৌঁছাই তখন শরীরের ওই অংশটি পুরোপুরি হিমায়িত ছিল।’

চারদিক ঢেকে থাকা বরফের মাঝে চার বছর পর পর আয়োজন করা হয় শীতকালীন অলিম্পিক। এবারে আয়োজন করা হয়েছে চীনের বেইজিংয়ে। ১৫ দিনের এ আসরে অংশ নিয়েছিলেন ৯১ দেশের ২ হাজার ৮৭১ ক্রীড়াবিদ।

হিমশীতল বরফের মাঝে ক্রিয়াবিদদের নৈপুণ্য টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে পাওয়া আনন্দের। অনেক দর্শকই এই আসরে খুঁজে পান অনন্য নান্দনিকতা।

তবে কনকনে ঠান্ডায় যারা শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই করেন সেই ক্রীড়াবিদদের জন্য রয়েছে নানা সংকট। অন্য সব ক্রীড়া আসরে ঘাম ঝরলেও শীতকালীন অলিম্পিকে প্রতি মুহূর্তে থাকে জমে যাওয়ার শঙ্কা।

কারও কারও ক্ষেত্রে সংকট আরও জটিল। সেই কষ্ট মুখ ফুটে বলা আরও কঠিন।

ফিনল্যান্ডের স্কি খেলোয়াড় রেমি লিন্ডহোম এবারের আসরে তার রেসে ২৮তম স্থান ‘অর্জন’ করেছেন। তাকে নিয়ে এখন বিপুল হতাশা ভক্তদের। তবে এসব নিয়ে ভাববার একদম অবকাশ নেই এই ক্রীড়াবিদের।

থাকবেই বা কী করে? রেস শুরু হওয়ার পর লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেয়ে তিনি বেশি ব্যস্ত ছিলেন ঠান্ডাজনিত এক অচিন্তনীয় জটিলতা সামাল দিতে।

লিন্ডহোমের স্কি রেসের দূরত্ব ছিল ৫০ কিলোমিটার। তবে ওই দিন তামপাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় দূরত্ব কমিয়ে ৩০ কিলোমিটার করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পড়ে শুরু হয় রেস।

স্কিতে নামার কিছু সময়ের মধ্যে জটিলতায় পড়েন লিন্ডহোম। তীব্র ঠান্ডায় তার পুরুষাঙ্গ পুরোপুরি জমে গিয়ে অনড় হয়ে পড়ে।

সেই মুহূর্তের ভয়াবহতা মনে করে এখনও শিউরে ওঠেন রেমি লিন্ডহোম। তিনি বলেন, ‘আপনারা শুধু অনুমান করে নিন তখনকার অবস্থা। আমি যখন ফিনিশ লাইনে পৌঁছাই তখন শরীরের ওই অংশটি পুরোপুরি হিমায়িত ছিল।

‘এটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ প্রতিযোগিতাগুলোর একটি। সেখানে কেবল নিজের সঙ্গে লড়াই করার ঘটনা ঘটছিল।’

এখানেই সংকটের শেষ নয়। প্রতিযোগিতা শেষে লিন্ডহোমকে দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়। হিটপ্যাক ব্যবহারের পর পুরুষাঙ্গে নমনীয়তা ফিরলেও তীব্র ব্যথায় আক্রান্ত হন তিনি। শীতকালীন অলিম্পিকের আসর শেষ হলেও সেই ব্যথা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন লিন্ডহোম।

দীর্ঘপথে স্কির সময় শীতজনিত নানা অসুবিধায় ভোগেন খেলোয়াড়রা। ফ্রস্টবাইটের কারণে অনেকের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে হাত ও পায়ের চামড়া কেটে ফেলার নজির কম নয়। তবে লিন্ডহোমের মতো সমস্যা অনেকেই শেষ পর্যন্ত চেপে যান। শুধু অল্প কয়েকটি ঘটনা সংবাদমাধ্যমে এসেছে।

সুইডিশ অ্যাথলিট ক্যালে হাফভারসন গত বছর লিন্ডহোমের মতোই একটি অভিজ্ঞতা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করেন। ফিনল্যান্ডে একটি রেসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তার যৌনাঙ্গও ঠান্ডায় জমে গিয়েছিল। এরপর যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা সহ্য করতে হয় তাকে।

অ্যান্টার্কটিক অ্যাডভেঞ্চারার অ্যালেক্স ব্রাজিয়ার ২০১৬ সালে ১১০০ মাইল ট্র্যাক করার সময় এ ধরনের অবস্থার শিকার হন, সাধারণভাবে সমস্যাটি ‘পোলার পেনিস’ নামে পরিচিত।

অ্যালেক্স ব্রাজিয়ার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে একটি ব্লগে লিখেছেন, পোলার পেনিস নামে একটি ঘটনা আছে, যা দৃশ্যত হাস্যকর; তবে এটি ভয়ংকর অস্বস্তির, অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং তীব্র ঠান্ডার সঙ্গে যুক্ত। এর ব্যথা অনেক দিন ধরে থাকে, আজ সকালেও কিছুটা কষ্ট পাচ্ছি।’

শীতকালীন অলিম্পিকে ক্রীড়াবিদরা তাদের মুখ ও কান ঢেকে রাখার জন্য কিছু বিশেষ অভ্যন্তরীণ পোশাক ও প্লাস্টার ব্যবহার করেন। তবে স্পষ্টতই এগুলো লিন্ডহোমকে যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা থেকে মুক্তি দিতে পারেনি। এ কারণে শীতকালীন অলিম্পিকের আগামী আসরে যৌনাঙ্গ উষ্ণ রাখার বিশেষ অন্তর্বাসের দাবি জোরাল হতে শুরু করেছে।

এ বিভাগের আরো খবর