এবার রাশিয়া থেকে সরাসরি জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের জন্য ‘নর্ড স্ট্রিম-টু’ পাইপলাইন প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত করেছে জার্মানি। জার্মানির এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে মস্কো।
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সবশেষ পদক্ষেপের পর জার্মানি এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ।
রাশিয়া ও জার্মানির মধ্যে এই পাইপলাইনের কাজ শেষ হয়েছে গত বছরের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু পাইপলাইনটি এখনও চালু হয়নি।
স্কোলজ বলেন, ‘ইউক্রেনের দুটি বিদ্রোহী অঞ্চলকে রাশিয়া স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয়ার পর জার্মান সরকার এই সিদ্ধান্ত নিলো।’
রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে তারা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লংঘন হিসেবে দেখছে।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি আহ্বান জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনের দুটি বিদ্রোহী অঞ্চলের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয়ার শাস্তি হিসেবে যেন অবিলম্বে এই পাইপলাইন প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া হয়।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা পাইপলাইন প্রকল্প স্থগিত করার জন্য জার্মানির প্রশংসা করেছেন।
জার্মানির সিদ্ধান্তের পর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেইন সাকি টুইটারে জানান, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস রপ্তানির জন্য বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে ১ হাজার ২২৫ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইন তৈরি করেছে রাশিয়া। গ্যাস পাইপলাইনটি নির্মাণে সময় লেগেছে পাঁচ বছর, ব্যয় হয়েছে ১১০০ কোটি ডলার। এই পাইপলাইনের সুবাদে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ গ্যাস রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়।
এই গ্যাস পাইপলাইনের মালিক রাশিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠান গাজপ্রোম।
এর ফলে ইউরোপের দুই কোটি ৬০ লাখ বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হবে বলে আশা করছে রাশিয়া। ইউরোপের দেশগুলোও রাশিয়া থেকে স্বল্প মূল্যে গ্যাস কিনতে আগ্রহী।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আশঙ্কা, এর ফলে ইউরোপ জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারে।
নর্ড স্ট্রিম-২ রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের প্রথম প্রকল্প নয়। এর আগে নর্ড স্ট্রিম-১ নামে একটি পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়, যেটি চালু আছে। এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১১ সালে। পরের ধাপ হিসেবে নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইনের কাজ শুরু হয়।
নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইন বন্ধ করে দেয়া হলে রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।