ফরাসি মুসলিমরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। ঠিক তেমন একজন ব্যক্তি হলেন ড. জাকি তুভাতি।
ড. জাকি হলেন আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত একজন ফরাসি মুসলিম। পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক। অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট হিসেবে প্যারিসের হাসপাতালে কাজ করেন তিনি। ২০ বছর ধরে ফ্রান্সে বসবাস করছেন।
কিন্তু তার ধর্ম ও সংস্কৃতির কারণে ফ্রান্সে ক্রমাগত বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে তাকে, তুরস্কের পত্রিকা ডেইলি সাবাহকে এমনটিই জানিয়েছেন ড. জাকি।
তাই তিনি তুরস্কে বসবাস করতে ইচ্ছুক। চিকিৎসা পেশা চর্চা করার জন্য তুরস্ক থেকে ফ্রান্সের ডিগ্রির সমতুল্য ডিগ্রি চান। তিনি তা অর্জনের জন্য এরই মধ্যে পড়াশোনা শুরু করেছেন। এ জন্য তাকে বেশ কিছু পরীক্ষা দিতে হবে। তুর্কি ভাষাও শেখা শুরু করেছেন। নিজের সন্তানদের ভর্তি করেছেন তুর্কি স্কুলে।
আমি তুরস্ককে খুব ভালোবাসি। এটি একটি মুসলিম দেশ এবং আমি যা খুঁজছি তার সবকিছুই এর মধ্যে রয়েছে। আমি শুধু ভেবেছিলাম কোন দেশটি বেছে নেয়া উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মুসলিম দেশ হওয়া। তা ছাড়া আমি একটি ভালো জীবন চাই। সে কারণেই আমি তুরস্ককে বেছে নিয়েছি।’
ইতিমধ্যে ফরাসি মুসলিমদের দেশত্যাগের ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। বুধবার লে জার্নাল দু দিমানচেতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষ বৃদ্ধির ফলে শত শত ফরাসি মুসলিম এখন তুরস্কে বসবাসকেই পছন্দ করছেন।
নিবন্ধে বলা হয়, উত্তর আফ্রিকার অনেক তরুণ উপসাগরীয় দেশগুলোয় বসবাস করছে। কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে উন্নত, পশ্চিমা দেশের মুসলিমরা বসবাসের জন্য তুরস্ককেই অভিবাসন গন্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করছেন।
তবে ডা. জাকি তুরস্কে স্থায়ী হওয়ার আগে তিনি দেশটি ঘুরে এসেছেন। তিনি তুরস্কের সামাজিক পরিবেশ খুবই পছন্দ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তুরস্ককে খুব ভালোবাসি। এটি একটি মুসলিম দেশ এবং আমি যা খুঁজছি তার সবকিছুই এর মধ্যে রয়েছে।
‘আমি শুধু ভেবেছিলাম কোন দেশটি বেছে নেয়া উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মুসলিম দেশ হওয়া। তা ছাড়া আমি একটি ভালো জীবন চাই। সে কারণেই আমি তুরস্ককে বেছে নিয়েছি।’
ফ্রান্সে মুসলিমদের বর্তমান জীবনযাপন নিয়ে ড. জাকি বলেন, ‘ফ্রান্সে মুসলিম রীতিনীতি মেনে জীবনযাপন করা খুবই কঠিন। আমার জীবনে ধর্ম খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই আমি ফ্রান্স ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ফরাসি মুসলিমদের এই ক্রমাগত দেশত্যাগ নিয়ে ‘ফ্রান্স থেকে মুসলিমদের নীরব ফ্লাইট’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমসও। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্স ত্যাগকারী মুসলিমদের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা এক গভীর সংকটকেই ইঙ্গিত করছে।