ইউক্রেন সীমান্তে আগে থেকেই প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন করেছিল রাশিয়া। রাশিয়ার এই সেনা মোতায়েন নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনা চলছে। এরই মধ্যে কিছু স্যাটেলাইট চিত্র উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ইউক্রেন সীমান্তে বহু যুদ্ধবিমান জড়ো করেছে রাশিয়া।
স্যাটেলাইট থেকে দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেন সীমান্তের কাছে বিমান ঘাঁটিগুলোতে জড়ো করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক রুশ যুদ্ধবিমান।
এই ঘটনাকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ সেনার ‘যুদ্ধের প্রস্তুতি’ বলেই মনে করা হচ্ছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া পাঁচটি বিমানঘাঁটি থেকে তোলা স্যাটেলাইট চিত্রে রুশ বিমান বাহিনীর ওই তৎপরতার চিহ্ন মিলেছে। সেখানে দেখা গেছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় সামরিক তৎপরতা বেড়েছে ইউক্রেন সীমান্তে।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, সুখোই-৩০, মিগ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও সামরিক হেলিকপ্টারের পাশাপাশি নানা সামরিক সরঞ্জামও মজুত করা হচ্ছে সেখানে।
যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই বলে আসছে, যেকোনো সময় রাশিয়া হামলা শুরু হতে পারে। তবে তাদের এ দাবি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। তারা বলছে, ইউক্রেনে হামলা নিয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
রাশিয়া এমন কথা বললেও এই স্যাটেলাইট চিত্র নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবার স্যাটেলাইট চিত্র তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরানো তো দূরের কথা, এখনও সেনা পাঠিয়ে যাচ্ছে মস্কো। ইউক্রেন সীমান্তের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ১৪টি ঘাঁটি বানিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। দ্রুত সীমান্তে সেনা পাঠাতে রাতারাতি তৈরি করে ফেলা হয়েছে অস্থায়ী সেতু।
সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন করে রাশিয়া। গত ১০ ফেব্রুয়ারি মিত্র দেশ বেলারুশকে সঙ্গে নিয়ে ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক মহড়া শুরু করে রাশিয়া। রোববার এই মহড়া শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর ইউক্রেনের জন্ম। রাশিয়া ইউক্রেনকে সব সময় পশ্চিমা বলয় থেকে মুক্ত রাখতে মরিয়া। প্রতিবেশী বেলারুশও মস্কোপন্থি। পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার আধিপত্য একচ্ছত্র।
এই অবস্থায় সামরিক সক্ষমতা দেখাতে সম্প্রতি সামরিক মহড়া বড় পরিসরে শুরু করে ন্যাটো। ইউক্রেনকে জোটে ভেড়াতে চেষ্টা চালাচ্ছে জোর। আর এখানেই আপত্তি রাশিয়ার। তাদের দাবি, ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের যোগ দেয়া রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
এমন পরিস্থিতিতে পাল্টা ব্যবস্থা নেয় রাশিয়া। সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুরু করে তারা। ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে পশ্চিমাদের।