অনেক জল্পনা কল্পনার পরে সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের পদে ফিরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলটির সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠকে নিজ ভাতিজা অভিষেককেই এ পদের জন্য বেছে নিয়েছেন।
এ বৈঠকে সহসভাপতি হয়েছেন যশবন্ত সিনহা, সুব্রত বক্সি ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে তৃণমূলের নতুন জাতীয় কর্ম সমিতির প্রথম বৈঠক হয়। সেখানে দলের বিভিন্ন পদে কারা বসবেন, তা নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিন বৈঠকের শুরুতে তৃণমূল নেত্রী বলেন, 'দল অনেক বড় হয়েছে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।'
এর আগে দলে অভিষেকের এক ব্যক্তি, একপদ নীতি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। তখন পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, 'এক ব্যক্তি একপদ নীতি সমর্থন করে না দল। দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা বলবেন।'
এরপর তৃণমূলের ভেতরের দ্বন্দ্ব সামাল দিতে তড়িঘড়ি করে জরুরি বৈঠক ডেকে দলের সব কমিটি বিলোপ করে নতুন জাতীয় কর্ম সমিতি ঘোষণা করেন দলের সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতাকে নিয়ে ২০ জনকে রাখা হয় নতুন জাতীয় কর্ম সমিতিতে, কিন্তু বাকি ১৯ জনকে কোনো পদ সেদিন দেয়া হয়নি।
শুক্রবার তৃণমূলের নতুন জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠকে দলের বিভিন্ন পদ বণ্টন করা হয়। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান ঘটিয়ে নিজের পুরোনো পদে ফিরলেন তিনি।
এ সময় তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন অরূপ বিশ্বাস। দলের সভাপতি ও কর্মসমিতির মধ্যে সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। দলের আর্থিক নীতিনির্ধারণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অমিত মিত্র, যশবন্ত সিনহাসহ কয়েকজনকে।
জাতীয় স্তরে দলের মুখপাত্র হচ্ছেন শুখেন্দু শেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও মহুয়া মৈত্র। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর সংগঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সুস্মিতা দেবকে।
বৈঠকে উপস্থিত মেঘালয়ের মুকুল সাংমা, উত্তর প্রদেশের রাজেশপতি ত্রিপাঠী, ত্রিপুরার সুবল ভৌমিক, হরিয়ানার অশোক তানোয়ার সংশ্লিষ্ট রাজ্যে তৃণমূলের সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন।
কর্ম সমিতির সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বৈঠকে।
এ ছাড়া আজকের বৈঠকে তিনটি পৌরসভার মেয়র বেছে নেয়া হয়। আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ির মেয়র হিসেবে গৌতম দেবের নাম ঘোষণা করেছিলেন । তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন বাকি মেয়রদের নাম ঘোষণা করেন।
বিধাননগরের মেয়র হচ্ছেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। চন্দন নগরের মেয়র হচ্ছেন রাম চক্রবর্তী এবং আসানসোল পৌরসভার মেয়র হচ্ছেন বিধান উপাধ্যায়।