ইউক্রেন ইস্যুতে জন্ম নিচ্ছে একের পর এক নাটকীয়তা। এবার ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুটি ব্যাংকে সাইবার হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
ইউক্রেনিয়ান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস অ্যান্ড ইনফরমেশন সিকিউরিটি এ দাবি করেছে। তবে এজন্য সরাসরি কাউকে দায়ী করা হয়নি।
বিবৃতিতে রাশিয়ার নাম উল্লেখ না করে তারা জানিয়েছে, আগ্রাসী আচরণে কাজ না হওয়ায় এবার নোংরা কৌশল বেছে নেয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের হোম পেজে এক বার্তায় জানানো হয়েছে, সাইটের নিয়ন্ত্রণ পেতে কাজ চলছে।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ওশাদব্যাংক সাইবার হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, সাইবার হামলার কারণে তাদের কিছু সিস্টেম ধীরগতির হয়ে গেছে।
আক্রান্ত আরেক প্রিভাত ব্যাংকের গ্রাহকরা একই সমস্যার কথা বলছে। অবশ্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি।
এদিকে ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন লক্ষাধিক রুশ সেনার কিছুসংখ্যক সরিয়ে নেয়ার যে দাবি করেছে মস্কো, তার প্রমাণ চাইছে ইউক্রেন ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা।
ইউক্রেন বলছে, সেনা সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত হওয়া দরকার। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, সেনা প্রত্যাহারের এখনো কোনো প্রমাণ দেখেনি ওয়াশিংটন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, রাশিয়ার পদক্ষেপে এখনও খুশি হওয়ার মতো কিছু নেই।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর ইউক্রেনের জন্ম। সেই থেকে ইউক্রেনকে পশ্চিমা বলয় থেকে মুক্ত রাখতে মরিয়া রাশিয়া। প্রতিবেশী বেলারুশও মস্কোপন্থি। পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার আধিপত্য এখনো একচ্ছত্র।
এ অবস্থায় সামরিক সক্ষমতা দেখাতে সম্প্রতি বড় পরিসরে সেনা মহড়া শুরু করে পশ্চিমাদের সামরিক জোট-ন্যাটো।
ইউক্রেনকে জোটে ভেড়াতে তারা চেষ্টা চালাচ্ছে জোর। আর এখানেই আপত্তি রাশিয়ার। তাদের অভিযোগ, ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের যোগ দেয়া রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এ ছাড়া সীমান্তে ন্যাটোর সামরিক মহড়ায় উদ্বিগ্ন মস্কো।
পাল্টা ব্যবস্থা নেয় রাশিয়া। সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুরু করে তারা। ক্রেমলিন শর্ত দেয়, ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে পশ্চিমাদের।
সে সঙ্গে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সামরিক মহড়া বন্ধের পাশাপাশি পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুনিয়া থেকে ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। রাশিয়ার কাছাকাছি কোনো দেশে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা যাবে না।
এসব দাবির মধ্যে ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করার দাবি ছাড়া বাকি ইস্যুগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর কথা বলছে হোয়াইট হাউস। কূটনৈতিক চেষ্টা চালাচ্ছে ইউরোপও।
কিন্তু এসব আলাপে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পশ্চিমাদের আরচণ তার কাছে স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন সাবেক কেজিবি প্রধান।
এ অবস্থায় ৩০ হাজার সেনা নিয়ে বড় পরিসরে বেলারুশে সামরিক মহড়া শুরু করে মস্কো। একে যুদ্ধের প্রস্তুতি দাবি করে আসছে পশ্চিমা বিশ্ব। কারণ ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখলে নেয়ার আগে এমন মহড়ায় দেখা গিয়েছিল রুশ সেনাদের।
আগ্রাসন চালানোর কোনো পরিকল্পনা নেই- এমনটা শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে রাশিয়া। মঙ্গলবার মস্কো জানায়, ইউক্রেন ঘিরে রাখা কিছু সেনা সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে ঠিক কতসংখ্যক সেনা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে, তা জানায়নি ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া।