নির্বাচনে জিতে পশ্চিমবঙ্গের চারটি পৌরসভা নিজেদের দখলে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এর আগে কলকাতা পৌরসভায়ও জয় পেয়েছিল দলটি। সেই জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে তৃণমূল কংগ্রেস বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি- এই চারটি পৌরসভার ভোটের ফলাফলে বিপুলসংখ্যক আসনে জয় পেয়ে তাদের পৌর বোর্ড গঠন করতে চলেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তার মুখে বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি এবারের নির্বাচনে। শিলিগুড়িতে বামেরা নির্বাচনে কোনো লড়াই করতে পারেনি। এমনকি প্রবীণ সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যও পরাজিত হয়েছেন। শিলিগুড়ি পৌরসভায় এই প্রথম নির্বাচিত হয়ে পৌর বোর্ড গঠন করতে চলেছে তৃণমূল।
সোমবার শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়ার আগে দলের এই জয়ে খুশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি খুশি, শিলিগুড়িতে জয়ের খবর নিয়ে যাচ্ছি। এটা আমাদের কাছে বড় ব্যাপার। গৌতম দেব শিলিগুড়ির মেয়র হবেন। কারণ তিনি প্রবীণ নেতা। অন্য জায়গাগুলো দল সিদ্ধান্ত নেবে।’
শিলিগুড়ির জয় রাজ্যের উন্নয়নের হাত ধরে এসেছে বলে জানিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, 'শিলিগুড়িতে আজ কত উন্নয়ন হচ্ছে। শিলিগুড়ি থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ সরাসরি যোগাযোগ হয়। সেখানে রাস্তা, ফ্লাইওভার, ভোরের আলো এ রকম নানা প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি।'
বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, ‘দার্জিলিং, শিলিগুড়ির জন্য কাজ করার কথা ছিল, তা করেনি বিজেপি। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও কোনো কাজ করেনি।’
মানুষের এই রায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মমতা বলেন, ‘এই জয়, মানুষের জয় । তবে যেকোনো জয় আমাদের আরও বেশি নম্র এবং মানবিক হতে সাহায্য করে।’
সোমবারের চার পৌর ভোটের ফলাফলে বিধাননগর পৌরসভার ৪১টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস একটি আসন পেলেও বিজেপি এবং বামেরা কোনো আসন পায়নি। শিলিগুড়ির ৪৭টি আসনের মধ্যে ৩৭টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বিজেপি ৫টিতে, বামেরা ৪টি এবং কংগ্রেস ১টি আসনে জয়লাভ করেছে। চন্দননগর পৌরসভার ৩২টি আসনের ৩০টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বাকি ২টি আসন পেয়েছে বামেরা। আসানসোল পৌরসভার ১০৬টি আসনের মধ্যে ৯০টি আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল।
তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তার কাছে বিরোধীদের হার বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
শিলিগুড়ির সদ্য সাবেক মেয়র সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য সিপিএমের এই বিপর্যয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘একটা বিপর্যয় হয়েছে। আমাদের যে ভোট বিজেপিতে গিয়েছিল, সেই ভোট আমাদের কাছে ফেরত আসার বদলে তৃণমূলের বাক্সে ঢুকেছে। আমাদের পলিটিক্যাল রিজেকশন হয়েছে।’