ভারতে চলমান হিজাব ইস্যু নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক এরই মধ্যে বৈশ্বিক ইস্যু হয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশেই চলছে আলোচনা, তবে ভারত বলছে, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্যকে স্বাগত জানাবে না তারা।
কর্ণাটকের কয়েকটি কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মুসলিম শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে তা পুরো ভারতেই ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি বেঙ্গালুরুর মতো শহরেও দিতে হয়েছে কারফিউ।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের (আইআরএফ) অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ রাশাদ হুসেন টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘স্কুলের হিজাব নিষিদ্ধ করা ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন।’
রাশাদ হুসেনকে গত বছরের ডিসেম্বরে আইআরএফের অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ হিসেবে নিযুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। আইআরএফের কাজ মূলত বাইরের দেশগুলোর ধর্মীয় স্বাধীনতা ও এ-সংক্রান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা।
এর আগে ওবামা প্রশাসনের সময় তিনি ইসলামিক সহযোগী সংস্থাতে (ওআইসি) যুক্তরাষ্ট্রের দূত ছিলেন। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কাছ থেকে কর্ণাটকের ঘটনার সমালোচনা সহজভাবে নেয়নি ভারত।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, যে বা যারা ভারতকে ভালোভাবে জানেন তারা বাস্তবতাকে ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘কর্ণাটক রাজ্যের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পোষাকসংক্রান্ত একটি বিষয় কর্ণাটকের মাননীয় হাইকোর্টের বিচার বিভাগের আওতায় রয়েছে। আমাদের সাংবিধানিক কাঠামো এবং প্রক্রিয়া, সেই সঙ্গে আমাদের গণতান্ত্রিক নীতি ও রাজনীতির আলোকে সমস্যাগুলো বিবেচনা করা হয় এবং সমাধান করা হয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যকে স্বাগত জানাবে না ভারত।’
মূলত হিজাববিষয়ক বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের সমালোচনার বিষয়ে সংবাদমাধ্যম প্রশ্ন করলে তিনি এই উত্তর দেন।
এদিকে হিজাব বিতর্ক নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত শুক্রবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কোনো তাড়াহুড়ো নয়, সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা বলেছেন, ‘কর্ণাটক হাইকোর্টকে আপাতত হিজাব বিষয়ে শুনানির অনুমতি দেয়া উচিত। আমরা সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য বসে আছি। সময় হলে আমরা শুনব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিষয়গুলো জাতীয় স্তরে ছড়িয়ে দেবেন না। আমরা গভীরভাবে পুরো বিষয়টি দেখছি। শুধু উপযুক্ত সময়ে হস্তক্ষেপ করা হবে।’