২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের আগে সেমিফাইনাল হিসেবে আখ্যা পাওয়া উত্তর প্রদেশ বিধানসভায় ভোট শুরু হয়েছে।
কৃষক বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় ৫৮টি আসনে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ ভোট শুরু হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি উত্তর প্রদেশে বড় ব্যবধানে জিতলেও এবারের নির্বাচনকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জন্য গণভোট হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাজ্যে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভালোভাবে সামলাতে না পারার অভিযোগ আছে যোগীর বিরুদ্ধে। তার নেতৃত্বাধীন ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যের গ্রামাঞ্চল করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গঙ্গায় মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। অনেকের মরদেহ বালুতে পুঁতে রাখা হয়, যে ছবি দেশবাসীকে শঙ্কিত করে তোলে।
এ নির্বাচনে বিজেপির মূল বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বাধীন জোটকে। রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের ছেলে অখিলেশ নিজেও মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। মুসলিম ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতা দীর্ঘদিনের।
অখিলেশের মূল জোটসঙ্গী রাষ্ট্রীয় লোক দলের জয়ন্ত চৌধুরী, ৩০টি আসনের ভোটারদের ওপর যার প্রভাব রয়েছে।
এবারের নির্বাচনকে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রের জন্যও পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। চার বছর আগে উত্তর প্রদেশ জয়ের জন্য তাকে নিযুক্ত করেছিলেন ভাই রাহুল গান্ধী। যদিও সে যাত্রায় উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য দেখাতে পারেননি তিনি।
দলিতদের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টিও নির্বাচনি লড়াইয়ে আছে। ২০টি আসনের ফলে প্রভাব রাখতে পারে তার দল।
বিধানসভায় ভোট শুরুর আগে প্রচারে ব্যাপক মেরুকরণ দেখেছে ২০১৩ সালের মুফাফফরনগর সহিংসতার পর ভোটারদের রায় বদলে যাওয়া পশ্চিমাঞ্চল। বিজেপির মূল স্ট্র্যাটেজিস্ট অমিত শাহ কৈরানাতে প্রচার চালান, যেখান থেকে ২০১৬ সালে কথিত হিন্দু স্থানান্তর শুরু হয়। প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বারবার বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টিকে পাকিস্তানের সমর্থক আখ্যা দিয়েছে।
প্রথম ধাপে ভোট শুরু হওয়া ৫৮ আসনের মধ্যে ৯১ শতাংশে ২০১৭ সালে জিতেছিল বিজেপি, তবে এবার কৃষি আইনের প্রতিবাদে কৃষকদের বিক্ষোভের কারণে পটপরিবর্তন হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে।
কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত বিজেপিকে শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কৃষকদের জোট সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার পক্ষ থেকেও একই আহ্বান জানানো হয়েছে।
সাত ধাপের নির্বাচনে ভোট শেষে গণনা শুরু হবে ১০ মার্চ। একই দিনে উত্তর প্রদেশ, গোয়া, মনিপুর, পাঞ্জাব ও উত্তরখণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ করা হবে।