ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। চালাচ্ছে একের পর এক মহড়া। পশ্চিমা গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চের দিকে ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। উত্তেজনা বিরাজ করছে পূর্ব ইউরোপে।
ঠিক সেই সময়েই কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার সাংবাদিকদের ইউরোপিয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান নীতি-নির্ধারক জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘আমি যতটুকু বুঝি, সেই আলোকে বলতে পারি আমরা স্নায়ুযুদ্ধের পরে সবচেয়ে বিপজ্জনক মুহূর্ত পার করছি।’
তার এই মন্তব্য এমন সময় আসলো যখন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোন মস্কো সফরে রাশিয়ার সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ এড়াতে চাইছেন।
ম্যাক্রোনের এই সফর পূর্ব ইউরোপে ও রাশিয়ার ইউক্রেন সীমান্তে চলমান অচলাবস্থার মধ্যে প্রথম কোনো শক্তিশালী পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সফর।
ফ্রান্সে এপ্রিলের নির্বাচনে পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়বেন ম্যাক্রন। যখন পশ্চিমারা রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা করছে ঠিক এসময় ম্যাক্রোন নিজেকে কিয়েভ ও ক্রেমলিনের মাঝে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
ম্যাক্রন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন, তিনি রাশিয়ার কাছ থেকে ভালো প্রতিক্রিয়া চাইছেন, যার ফলে বিশ্বাস, স্থিতিশীল ও দৃশ্যমান সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা যায়।
এ সময় পুতিন বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি ফ্রান্সের বর্তমান নেতৃত্ব খুবই ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ইউরোপে সমান নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে। দুই দেশই ইউরোপের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কী ঘটছে, সেই বিষয়ে অভিন্ন উদ্বেগ ভাগ করেছে।’
এদিকে রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসনের সম্ভাবনাকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা যখন বলছেন, ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা চালানোর ৭০ শতাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রাশিয়া। ঠিক এমন সময় ইউক্রেন বলছে, মহাপ্রলয়ের মতো ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বাস করবেন না।
ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক রুশ সেনা মোতায়েন ও বেলারুশের সঙ্গে দেশটির একের পর এক মহড়া সত্ত্বেও রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা।
তিনি রবিবার টুইট বার্তায় বলেন, কোনো ধরনের মহাপ্রলয়ের মতো ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বাস করবেন না। ভিন্ন রাজধানীর ভিন্ন পরিস্থিতি। কিন্তু ইউক্রেন যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। যদিও তিনি টুইটটি করেছেন শুধু ইউক্রেনবাসীর জন্য।
দিমিত্র কুলেবা আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী, নিরঙ্কুশ আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং দেশের ওপর ইউক্রেনীয়দের বিশ্বাস রয়েছে। ভয় পাওয়া উচিত শত্রুদের, আমাদের নয়।’