পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ এক তরুণ নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহর।
নিজ অ্যাপার্টমেন্টে গত বৃহস্পতিবার নো-নক আইনে সেন্ট পল পুলিশ ডিপার্টমেন্টের অভিযানে গুলিতে নিহত হন আমির লুক নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ। তার বয়স হয়েছিল ২২।
নো-নক আইনে ওয়ারেন্ট ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা বাড়িতে তল্লাশি চালানোর অধিকার রাখে পুলিশ। এ ঘটনার পর অবশ্য এই আইনটি স্থগিত করেছেন শহরের মেয়র জাজকব ফ্রে। জানিয়েছেন, জননিরাপত্তায় বিকল্প ভাবা হচ্ছে।
এ ঘটনার তিন দিন পর বড় ধরনের বিক্ষোভে নামেন শহরের পাঁচ শতাধিক মানুষ। তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করে গভর্নমেন্ট ভবনের সামনে আমির হত্যার বিচার দাবি করেন তারা। এ সময় অল্পসংখ্যক পুলিশ তাদের চারপাশে দেখা যায়।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গুলির সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বরখাস্ত ও গ্রেপ্তারের পাশাপাশি শহরের মেয়র ও পুলিশপ্রধানের পদত্যাগ দাবি করেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় কৃষ্ণাঙ্গদের নিরাপত্তায় জোর দেয়ার আহ্বান জানান তারা।
পুলিশ অবশ্য আমিরকে নির্দোষ বলতে নারাজ। ঘটনার দিন সংবাদ সম্মেলন করে মিনেপোলিসের পুলিশপ্রধান অ্যামেলিয়া হাফম্যান জানিয়েছিলেন, ঘটনার ভিডিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযানের সময় আমির পুলিশ সদস্যদের দিকে বন্দুক তাক করে রেখেছিলেন। তাই পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল।
পুলিশের সাফাই আমলে নিচ্ছেন না বিক্ষোভকারীরা। তারা বলছেন, বাড়িতে অস্ত্র রাখার অধিকার রয়েছে আমিরের। কোনো সতর্ক ছাড়াই তাকে গুলি করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ আমিরের অ্যাপার্টমেন্টের দরজা চাবি দিয়ে খুলছে। এ সময় তাদের বলতে শোনা যায়, মাটিতে শুয়ে পড়ো।
পরের দৃশ্যে দেখা যায়, এক পুলিশ কর্মকর্তা শুয়ে থাকা আমিরের সোফায় লাথি মারেন। আমির ঘুরে তাকালে তার হাতে একটি বন্দুক দেখা যায়। দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে অন্তত তিনটি গুলি করা হয় আমিরকে।
আমিরের পরিবারের আইনজীবীরা বলছেন, তার অপরাধমূলক কোনো ইতিহাস ছিল না। তার কাছে থাকা অস্ত্রটি বৈধ।
মিনেপোলিস শহরে এ ধরনের ঘটনা প্রথম না। এর আগে পুলিশের নির্যাতনে রাস্তায় আরেক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু হয়।
জর্জ ফ্লয়েড নামের ওই যুবককে ২০২০ সালের মে মাসে মিনেয়াপোলিস শহরে আটক করে পুলিশ। পরে তার ঘাড় চেপে ধরেন পুলিশ সদস্যরা। এতেই তার মৃত্যু হয়।
- আরও পড়ুন: কৃষ্ণাঙ্গ ফ্লয়েড ‘হত্যা’: ৪ পুলিশ কর্মকর্তা অভিযুক্ত
- আরও পড়ুন: কৃষ্ণাঙ্গ ফ্লয়েড হত্যায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত
এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বিশ্বজুড়ে। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনকে ২২ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।