২০২০ সালের জুন মাসে ভারত ও চীন লাদাখ উপত্যকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় ভারতের ২০ সেনা নিহত হন। চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল সংঘর্ষে তাদের চার সেনা নিহত হয়েছেন।
এবার অস্ট্রেলিয়ান অনুসন্ধানী সংবাদপত্র দ্য ক্ল্যাক্সনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গালওয়ান উপত্যকার ঘটনায় চীনের ৩৮ সেনা মারা গেছেন।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২০ সালের ১৫-১৬ জুনে লড়াইয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে অন্ধকারে গালওয়ান নদীর ওপর দিয়ে ফেরার চেষ্টা করার সময় ৩৮ চীনা সেনা ডুবে মারা যান।
যদিও চীন জানিয়েছিল গালওয়ান ঘটনায় তাদের চার সেনা মারা গেছেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই ঘটনায় চার সেনাকে রাষ্ট্রীয় পদক দেয় বেইজিং।
প্রতিবেদনটি অজ্ঞাতনামা সোশ্যাল মিডিয়া গবেষকদের একটি গোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত গবেষণার ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। চীনা ব্লগার, মূল ভূখণ্ডভিত্তিক চীনা নাগরিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং চীনা কর্তৃপক্ষের মুছে ফেলা মিডিয়া প্রতিবেদনগুলো গবেষকদের তথ্যসূত্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনারা ১৫ জুন রাতে গালওয়ান উপত্যকার একটি বিতর্কিত এলাকায় চীনা দখল সরাতে গিয়েছিলেন। সে সময় সেখানে কর্নেল কিউ ফাবাওর নেতৃত্বে থাকা ১৫০ চীনা সেনার সঙ্গে ভারতীয় সেনাদের লড়াই বেধে যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কর্নেল ফাবাও যে মুহুর্তে আক্রমণ করেছিলেন, তখনই তাকে ভারতীয় সেনারা ঘেরাও করেছিলেন। তাকে উদ্ধার করার জন্য পিএলএ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার চেন হংজুন এবং সেনা চেন জিয়ানগ্রন স্টিলের পাইপ, লাঠি এবং পাথর ব্যবহার করে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে শারীরিক হাতাহাতি শুরু করেন, যখন তিন চীনা সেনা সদস্য মারা যান, পিএলএ সেনারা ভয় পেয়ে পিছু হটতে শুরু করেন।’
চীন সরকার নিশ্চিত করা মৃতদের একজন ছিলেন ওয়াং ঝুওরান, তিনি পশ্চাদপসরণকারী সহকর্মীদের সাহায্য করতে এবং ফিরে আসার পথ দেখাতে এগিয়ে এসেছিলেন বলে জানা গেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘পিএলএ সেনাদের জল প্যান্ট পরারও সময় ছিল না।
তারা ওয়াংয়ের নির্দেশনায় অন্ধকারে নদীর বরফের জল পার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। নদীটি হঠাৎ করে বেড়ে ওঠে এবং আহত সেনারা পিছলে যেতে থাকেন এবং স্রোতে ভেসে যান।’
বেশ কিছু চীনা মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট 'ওয়েইবো' ব্যবহারকারীদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ওয়াংসহ কমপক্ষে ৩৮ চীনা সেনা সদস্য সেই রাতে ডুবে যান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আসলে কী ঘটেছিল, কী কারণে সংঘর্ষ হয়েছিল সে সম্পর্কে অনেক তথ্য বেইজিং লুকিয়ে রেখেছে।'
চীন বিশ্বকে যা বলেছিল তা বেশির ভাগই বানানো গল্প ছিল।’