অরুণাচল প্রদেশের এক কিশোরকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল চীনা পিপলস আর্মির (পিএলএ) সদস্যরা, ভারতের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ দেনদরবারের পর গত ২৭ জানুয়ারি ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে সেই কিশোরকে হস্তান্তর করেন চীনা সেনারা।
এবার সেই কিশোরের বাবা অভিযোগ করেছেন, ‘চীনের সেনারা কিশোর ছেলের ওপর নির্যাতন করেছেন, এমনকি তারা তাকে দুইবার বৈদ্যুতিক শকও দিয়েছেন।’
নির্যাতনের শিকার মিরাম তারাম ১৭ বছর বয়সের একজন কিশোর।
ভারত-চীন সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর লুংটা জোড় এলাকার কাছে একটি শিকার দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহ করা এবং মাঝে মধ্যেই বনে শিকার করা অরুণাচলের উপজাতিদের স্বাভাবিক কাজ।
১৮ জানুয়ারি পিএলএ সদস্যরা ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতর থেকে তাকে তুলে নিয়ে যান।
মিরামের বন্ধু জনি ইউইং জানান, শিকারে সে ও মিরাম একই সঙ্গে অন্ধকার জঙ্গলে হাঁটছিল। এ সময় হঠাৎ করে পিএলএ সদস্যরা হাজির হয়ে বন্দুকের নলের মুখে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যান।
জনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরবর্তী সময়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি জানায়।
পরে মিরামের পরিবার নিকটবর্তী টুটিং থানায় অভিযোগ করে। অরুণাচলের বিজেপি সংসদ সদস্য তাপির গাঁও ভারতের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান।
ভারতীয় কিশোরকে ফিরিয়ে আনতে চীনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দেশটি।
দুই দেশের মধ্যে এক সপ্তাহের বেশি উচ্চস্তরের কূটনৈতিক আলোচনার পর ২৭ জানুয়ারি আনজাও জেলার কিবিথু সেক্টরের ওয়াচা-দামাই ইন্টার-অ্যাকশন পয়েন্টে মিরামকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এরপর তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল, যাতে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা মূল্যায়ন করা যায়। এ ছাড়া কিছু আইনি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার ছিল। প্রায় দুই সপ্তাহ পর অবশেষে সোমবার সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয় মিরাম।